রাত পোহালেই বাংলা নববর্ষ। তাই নতুন বছরে চমক থাকলে মন্দ হয় না। তাই এবার রাজ্যবাসীকে চমকে দিতে চান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই উপলক্ষ্যে রাজভবনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। সেই অনুষ্ঠান থেকেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলায় ভাষণ দেবেন বলে সূত্রের খবর। বাংলা নববর্ষের আগে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বীরভূম থেকে বঙ্গবাসীর জন্য কি বার্তা দেন সেদিকে তাকিয়ে সকলেই। আর তারপরই বাংলার নাগরিকদের কাছে বাংলা ভাষায় নিজের মনের ভাব ফুটিয়ে তুলবেন বড়লাট।
হঠাৎ কেন এমন উদ্যোগ? এই সিদ্ধান্তের পিছনে তিনটি কারণ আছে। এক, বাংলা নববর্ষ। তাই এই রাজ্যের রীতি পালন করতেই বাংলা ভাষায় ভাষণ। দুই, সরস্বতী পুজোর দিনে তিনি হাতেখড়ি নিয়েছিলেন। সুতরাং বাংলা ভাষা তিনি কতটা শিখেছেন সেটা প্রমাণ করা। আর তিন, এই বাংলা ভাষাতেই ভাষণ দিয়ে তিনি রাজ্যের মানুষের কাছে পৌঁছতে চান তাঁর বার্তা। ইতিমধ্যেই রাজভবনে সাধারণের জন্য প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে যদি কোনও নাগরিকের সঙ্গে বড়লাটের কাকতালীয়ভাবে দেখা হয়ে যায় তখন বাংলা ভাষাই তিনি ব্যবহার করবেন। বলা যেতে পারে, নববর্ষেই বাঙালি হওয়ার পথে এগোচ্ছেন রাজ্যপাল। তাই পয়লা বৈশাখ রাজভবনের অনুষ্ঠানে বাংলায় ভাষণ দেবেন সিভি আনন্দ বোস বলে সূত্রের খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? তাঁর পদবি ‘বোস’। অথচ রাজ্যপাল বাঙালি নন। কেরলের কোট্টায়ামে জন্ম সিভি আনন্দ বোসের। তবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে আসীন হওয়ার পরই তিনি অনুভব করেন বাংলা ভাষার মিষ্টতা। তাছাড়া এখানকার সাধারণ মানুষ কি বলতে চান সেটা জানতেই বাংলা ভাষা শেখার উদ্যোগ নেন। আর তারপরই হাতেখড়ি। এমনকী প্রত্যেকদিন কাজের শেষে রাতে বাংলা ভাষা নিয়ে রাজভবনের অন্দরে নিরিবিলিতে চর্চা করেন রাজ্যপাল বলে সূত্রের খবর। বাংলার শেখার আগ্রহ বারবার প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
রাজ্যপালের মত ঠিক কী? সরস্বতী পুজোর দিনে হাতেখড়ি নিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। রাজভবনে রাজ্যপালকে ‘অ–আ’ লেখায় দিয়াসিনি রায় নামে একটি ছোট্ট পড়ুয়া। এমনকী সরকারি স্কুলের এক বাংলা বিভাগের শিক্ষক এখন তাঁকে নিয়মিত বাংলা শেখাচ্ছেন বলে সূত্রের খবর। তাই এবার ইংরেজি ছেড়ে বাংলায় ভাষণও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। সেটার উপযুক্ত সময় শনিবার বাংলা নববর্ষ। সেদিন বাঙালি সংস্কৃতিকে সামনে রেখে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে রাজভবনে। সেখানেই বাংলার ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর মতে, ‘যেখানেই কাজ করি না কেন, স্থানীয় ভাষা শেখাটা জরুরি। তাতে সাধারণ মানুষের উপকার হয়।’