বাঙালির পাতে মাছ পড়বে না, তা কি হয়? তবে এবারে ঘন ঘন ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপের জেরে হওয়া অতি বর্ষণের ফলে আঙুল কামড়াতে হতে পারে মৎস্যরসিকদের। এমনটাই স্পষ্ট জানাল মৎস্য দফতর।
ভোজনরসিক বাঙালির পাতে কতটা মাছ সরবরাহ করতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান মৎস্য দফতর। এর প্রধান কারণ হল, অতিরিক্ত বর্ষণ ছাড়াও জলাধারগুলি জল ছাড়ায় বিপন্ন উপচে পড়েছে মাছের ভেড়ি ও পুকুরগুলো। ডাঙায় উপচে পড়া জলে মাছের ভেড়ি ও পুকুরের চাষ করা মাছ এদিক-ওদিক ভেসে গিয়েছে। ফলে, যেমন বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা, তেমনই মাথায় হাত পড়েছে মাছ বিক্রেতাদেরও। তাই পুজোর মরশুমেও ভোজনরসিকদের পাতে মাছ পড়বে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছে মৎস্য দফতর। সে ক্ষেত্রে পুজোর আগে চাহিদা মতো মাছ জোগান দেওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, 'সারা বছর মাছের যা চাহিদা থাকে, সেই তুলনায় পুজোর সময় চাহিদা তুলনামূলক অনেকটাই বেশি থাকে। কিন্তু এবার অতিবৃষ্টিতে অনেক ভেড়ি ডুবে গিয়েছে। সেখানে থেকে প্রচুর মাছ ভেসে গিয়েছে। পুজোর মুখে এত ঘন ঘন নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্ত হচ্ছে। দুর্যোগের সময় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে নামতে দেওয়া হয় না। যে কারণে বাজারে সামুদ্রিক মাছেরও ভাটা রয়েছে। ফলে এবার পুজোয় মাছের জোগান স্বাভাবিক থাকবে না। বড়জোর পুজোর দিনগুলোতে দিনে ৫০৪১ মেট্রিক টন মতো মাছ জোগান দেওয়া যাবে বাজারগুলোতে।'
মন্ত্রী আরও বলেন, 'এবারের দুর্যোগে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেনরি আইল্যান্ড, ফ্রেজারগঞ্জের ভেড়িগুলো। এখানে যশ বা ইয়াসে ব্যাপক পরিমাণ মাছের ক্ষতি হয়েছে। অতিবৃষ্টিতেও প্রচুর মাছ বেরিয়ে গিয়েছে।'
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে প্রায় ১৭ টি ভেড়ি রয়েছে মৎস্য দফতরের। এছাড়াও ছোট ভেড়ি সংখ্যা প্রায় ১১৮টি। এর মধ্যে অতিবৃষ্টিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হেনরি আইল্যান্ড, ফ্রেজারগঞ্জের ভেড়িগুলো এখন জলমগ্ন। কলকাতার বাইপাসের ভেড়িগুলোও জল থইথই করছে।