উচ্চমাধ্যমিকের চতুর্থ প্রেরণা পাল
উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ প্রেরণা পাল। বাড়ি বারাসতে। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী। তবে যেদিন উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল বেরিয়েছিল সেদিন আলাদাভাবে নজর কেড়েছিলেন তিনি। রাজ্যের শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। এনিয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় একেবারে হইচই পড়ে যায়। বহু মানুষ প্রশংসাও করেন। কলাবিভাগে পড়াশোনা করেও নজরকাড়া রেজাল্ট করেছিলেন প্রেরণা। আর বৃহস্পতিবার সেই প্রেরণার গলাতেই কিছুটা অন্য সুর। এমনটাই সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার আয়োজিত বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গনের উচ্চমাধ্য়মিকে কৃতীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানে অবশ্য প্রেরণা জানিয়ে দিলেন, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সেই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমি কখনও সরাসরি বলিনি বাংলা আমার রাজ্য নয়। আমার বক্তব্যের একটি ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছিল।
তবে এর আগে ফলাফল বের হওয়ার দিন প্রেরণা জানিয়েছিলেন,
গবেষণাধর্মী কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখি করতে ভালোলাগে। সেই কাজটাই পেশা হিসাবে বেছে নিতে চাই। সবার জন্য কৃতজ্ঞ। একার কষ্টের ফসল এটা নয়। স্কুলের টিচার, আত্মীয় স্বজন সকলের সম্মিলিত প্রয়াস এই রেজাল্ট। বেশ ভালো লাগছে। আমার ইংরেজি নিয়ে পড়ে চাই। দর্শন খুব প্রিয় বিষয়। এটাই আমায় হতে হবে এটা ভাবিনি। লেখালেখিকে পেশা বানাতে চাই।
আমার পরিচয় তো আমার পরীক্ষার খাতা। মা বাবা আমার প্রথম শিক্ষক। মানুষ গড়ার শিক্ষক তাঁরাই। স্বেচ্ছায় পড়াশোনা চালিয়েছি।
শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে তিনি বলেছিলেন, কিছু বলার নেই একটা সময় দুঃখ হচ্ছিল। রাস্তায় দাদা দিদিদের দেখে। এখন হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। কারণ আমার দাদু, মা বাবা শিক্ষক। প্রতিবছর দেখি দাদা দিদিরা প্রণাম করে যায়।.. আমাদের এখনকার সময়ের শিক্ষকদের দেখি আমার মনে হয় ভীষণভাবে হতাশার, যাদের যেটা প্রাপ্য সেটা তারা পাচ্ছেন না। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি।.. তারা তো মানুষের গড়ার কারিগর কিন্তু সেখানেই যখন সর্ষের মধ্য়ে ভূত যেটাকে বলে। এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয় যেমন, এই দুর্নীতিযুক্ত রাজ্য আমার রাজ্য হতে পারে না। বলেছিলেন প্রেরণা।
এরপরই মেধাবী ছাত্রীর মুখে রাজ্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুনে চমকে উঠেছিলেন অনেকেই। কার্যত দুর্নীতির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন প্রেরণা। কিন্তু এদিন অবশ্য তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
প্রেরণার বাবা অশোক পাল সেদিন জানিয়েছিলেন, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যেভাবে বিতর্ক দানা বাঁধছে…তাতে শিক্ষকের সম্মান সে জায়গায় নেই।