যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রকে র্যাগিং করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়ে ছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গোটা বাংলা কেঁপে উঠেছিল। এবার এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করল অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির পক্ষ থেকে দ্রুত শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। চার মাস পেরিয়ে গিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এবার শোকজের মুখে পড়ল অভিযুক্তরা। একইসঙ্গে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে আরও দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। কড়া সিদ্ধান্ত নিল অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। এবার সেই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের সুপারিশ করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। দ্রুত এই ঘটনায় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। অরিত্র মজুমদার নামে এক পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। আবার রুদ্র চট্টোপাধ্যায় নামেও এক পড়ুয়ার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। একমাসের জন্য রুদ্রকে সাসপেন্ডের সুপারিশ করেছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি।
অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এখানের পাঁচ জন ছাত্রকে হস্টেল থেকে বহিষ্কার এবং চারজনকে সেমিস্টারের জন্য সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। এমনকী আরও ২৫ জন পড়ুয়াকে একটি সেমিস্টারের জন্য সাসপেন্ড ও হস্টেল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে র্যাগিং বিরোধী কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘ওই বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর সঙ্গে র্যাগিংয়ের যোগ রয়েছে।’ সামান্য পরিবর্তন করে সেই রিপোর্টই গ্রহণ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড। ছাত্র মৃত্যুর পর ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কড়াকড়ি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিতে রাতে অবাধ যাতায়াত ইতিমধ্যেই বন্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভোট কাস্তে হাতুড়িতে দিলে ধন্যবাদ জানাব’, সিপিএম বন্দনায় তৃণমূল বিধায়ক, তুঙ্গে বিতর্ক
এছাড়া গত অগস্ট মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় নদিয়া জেলার বগুলার এক ছাত্রের। ওই ঘটনার পরই নানা প্রশ্ন ওঠে। এবার এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপের সুপারিশ করল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। উপাচার্য, অধ্যাপক ছাড়াও ৩৩ সদস্যের এই কমিটিতে রয়েছেন ছাত্র সংগঠনের সদস্য এবং পুলিস অফিসাররাও। গত ২৯ নভেম্বর তারিখে বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত পড়ুয়ার বাবা। সেখান থেকে একটা চাপ তৈরি হয়। আবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নির্দেশ দেন, আগে র্যাগিং নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর সমাবর্তন নিয়ে বৈঠকের অনুমতি মিলবে। সুতরাং আরও একটা চাপ কাজ করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।