রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কিছুদিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে অপসারণ করেছিলেন। তবে তাঁকে রেখে দিয়েছেন রাজ্য সরকার। এবার সেই বুদ্ধদেব সাউয়ের সঙ্গে দেখা করলেন বর্ধমান–দুর্গাপুরের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। শুধু তাই নয় বুদ্ধদেবের পাশে বসে কথা বলেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। এমন ছবি প্রকাশ্যে চলে আসায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অন্দরে। কেন দেখা করলেন দিলীপ ঘোষ? কী বিষয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই বুদ্ধদেব সাউকে আগে থেকে চিনতেন দিলীপ ঘোষ। কারণ এই বুদ্ধদেব সাউ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ বলে সূত্রের খবর। তার উপর শিক্ষক সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী অধ্যাপক ও গবেষক সঙ্ঘ’–এর এই রাজ্যের সভাপতি। এটাও আরএসএসের একটি সংগঠন। কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সমাবর্তনের ঠিক আগের দিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেন বুদ্ধদেব সাউকে। তখন রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার তাঁর পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু বুদ্ধদেব সাউকে দিলীপের পাশে বসতে দেখা যাওয়ায় ক্যাম্পাসে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপির আর এক নেতা শমীক ভট্টাচার্যও উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষকে ঘিরে ‘গো–ব্যাক’ স্লোগান, তৃণমূল–বিজেপির ধস্তাধস্তি, মোতায়েন পুলিশ
তাহলে কি নতুন কোনও সমীকরণ? এই বিষয়ে বিশদে কেউ কিছু বলতে চাননি। তবে বুদ্ধদেব সাউ বলেন, ‘আইনজীবীদের নিয়ে একটি দোলের অনুষ্ঠানে আমায় নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। সেখানে দিলীপ ঘোষ আসেন। তৃণমূল, সিপিএমের নেতারা ডাকলে সেখানেও যাব। ক্যাম্পাসে সিপিএমের সঙ্গে দোল খেলেছি। কোনও বিতর্ক হয়নি। দিলীপ ঘোষ কি খারাপ মানুষ? মেশা যাবে না? ক্যাম্পাসে পার্থপ্রতিম রায়রা চায়, কেউ থাকবে না। শুধু সিপিএম থাকবে।’ শিক্ষক সমিতি জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় পাল্টা বলেন, ‘ওঁকে ছবিতে এক বিজেপি নেতার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। যিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছিলেন। উপাচার্যের কাজ না করে বুদ্ধদেব মাসের পর মাস ভাতা নেন।’
এই ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার যুগ্ম সম্পাদক মনোজিৎ মণ্ডল সুর চড়িয়েছেন। দিলীপ ঘোষের উপস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বুদ্ধদেব বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের নেতা। অথচ তাঁকেই বিজেপির আচার্য ওঁকে অসম্মান করে সরিয়ে দিয়েছেন। সমাবর্তন আটকাতে চেয়েছেন। রাজ্য সরকার হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর কথা মাথায় রেখে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে রাজধর্ম পালন করেছে।’