কলকাতা লাগোয়া পঞ্চসায়রের অতিথিশালা থেকে বিরোধী জয়ী প্রার্থীদের অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল কংগ্রেস এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার বেশি রাতে গাড়ি করে এসে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ৩ জন জয়ী বিজেপি প্রার্থী এবং ১ জন বাম সমর্থিত জয়ী নির্দল প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী বিজয়ী প্রার্থী বলে খবর। যাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতেছিল এবং অপহৃত হয়েছিল। কিন্তু আজ তাঁরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, স্বেচ্ছায় গিয়েছেন। কেউ তাঁদের অপহরণ করেনি।
পুলিশকে এই চিঠি চারজন লেখার পর প্রমাণিত হল তৃণমূল কংগ্রেস এই কাজ করেনি। যা তারা প্রথম থেকেই বলে আসছিল। পঞ্চসায়র থানার অফিসার ইনচার্জকে ‘চিঠি’ দিয়ে চারজনই একই কথা জানিয়েছেন। তারপরই এই চিঠি নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। অথচ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল অপহরণের ঘটনা বলেই চাউর হয়েছিল। এমনকী এই ঘটনাকে সামনে নিয়ে এসে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম করে তোলেন বিরোধীরা। সুতরাং প্রশ্ন উঠছে, বিরোধীরা না জেনে শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন কেন? অপহরণ হয়ে থাকলে তাঁরা চিঠি লিখে কেমন করে স্বেচ্ছায় যাওয়ার কথা জানালেন?
এদিকে কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৫টি। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ৪টি, বিজেপি ৬টি, সিপিএম ৩টি এবং সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ১টি আসনে জয়লাভ করে। চাপ আসতে পারে বুঝতে পেরে পঞ্চসায়রে একটি অতিথিশালায় আশ্রয় নেন বিরোধী প্রার্থীরা। তারপর সামনে আসে অপহরণের কাহিনী। এখন সামনে এল সেটা সঠিক নয়। এই অপহরণের ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সিপিআইএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এবার সেই চার জয়ী প্রার্থীর চিঠি ঘিরে তোলপাড় হয়ে গেল রাজ্য–রাজনীতি। সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল এই অপহরণের ঘটনাটি।
আরও পড়ুন: মণিপুর সফরে যাচ্ছেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ২০ জন প্রতিনিধি, দু’দিন খতিয়ে দেখবেন অবস্থা
ঠিক কী লিখেছেন তাঁরা চিঠিতে? তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার পর দাবি করেছিল, এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। বিরোধী প্রার্থীরা নিজেরাই অতিথিনিবাস ছেড়ে চলে এসেছেন। এবার যেন সেই দাবিতেই সিলমোহর দিলেন ওই চারজন জয়ী কাউন্সিলর। তাঁরা পঞ্চসায়র থানার অফিসার ইনচার্জকে চিঠি লেখেন। সেখানে তাঁরা প্রত্যেকেই লিখেছেন, ‘আমাদের কেউ অপহরণ করেনি। আমরা স্বেচ্ছায় গিয়েছি। আমাদের নিয়ে যেন গুজব না ছড়ানো হয়।’ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ইস্ট ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার। ওই চিঠি সত্যই তাঁদের লেখা কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আগ্নেয়াস্ত্রের কোনও চিহ্ন মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আর যাঁরা অপহরণ হয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁদের জেলায় দেখা গিয়েছে।