কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান ধরতে এসে যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি কেউ। ঘড়িতে তখন প্রায় ৯টা বেজে ১২ মিনিট। আচমকাই কালো ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যায় কনভেয়ার বেল্টের কাছে। তা থেকেই আচমকা আগুনের লেলিহান শিখা। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। আর সেই আগুনের ভয়াবহ শিখা দেখে যাত্রীদের মধ্য়ে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দেয়। শুরু হয় যাত্রীদের প্রাণভয়ে ছোটাছুটি। নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই ছবি আগে কবে দেখা গিয়েছে তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই।
কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ টুইট করে জানিয়েছে, মাইনর ফায়ার ও ধোঁয়া চেক ইন এরিয়া পোর্টাল ডি এর কাছে। ৯টা ১২ মিনিটে আগুন লেগেছিল। ৯টা ৪০ এ নেভানো হয়েছে। সমস্ত যাত্রীদের নিরাপদে সরানো হয়েছে। চেক ইন প্রসেস স্থগিত ছিল ধোঁয়ার জন্য। ১০টা ১৫ থেকে চেক ইন প্রসেস,অপারেশন শুরু হয়েছে।
তবে এদিন অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কোথাও পকেট ফায়ার রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।
বিমানবন্দর স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত হাই সিকিউরিটি জোন। সেখানে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। যাত্রীদের অনেকের কাছেই ভারী লাগেজ ছিল। মহিলা, শিশু, বয়স্কদের মধ্য়ে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে দ্রুত বিমানবন্দরের ডিপার্চার সেকশন থেকে তাদের বাইরে বের করার কাজ শুরু করে দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এক যাত্রী বলেন, দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। চারদিকে কালো ধোঁয়া। লাগেজ নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না। রাতে বিমান কখন ছাড়বে তা কিছুই বুঝতে পারছি না।
কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকে যে বিমানবন্দরে সেখানে আগুনের এই লেলিহান শিখা দেখে অনেকেরই হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। একে একে দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসতে শুরু করে। চেক-ইন বন্ধ করা হয়। একের পর এক বিমানকে হোল্ডে রাখা হয়। দমকলের অন্তত ৮টা ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। অক্সিজেন সিলিন্ডার, মুখে মাস্ক পরে ভেতরে ঢোকেন কর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে অভিযোগ উঠছে যেখানে আগুন লেগেছিল সেখানে স্বয়ংক্রিয় আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল না। তবে এনিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সম্ভবত সর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরের এক মহিলা কর্মী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ৯ বছর কাজ করছি। কিন্তু এমন ছবি কোনওদিন দেখিনি। তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, সিআইএসএফ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।