ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে কলকাতার বাতাসের মান। নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করছে বিষ। দূষণের নিরিখে দিল্লিকেও টেক্কা দিচ্ছে শহর কলকাতা। যা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পরিবেশবিদদের কপালে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দিল্লির বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে সূক্ষ্ম ধূলিকণা ৩২২ থেকে ৩৩৬ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। সেই জায়গায় ওইদিন কলকাতার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে সূক্ষ্ম ধূলিকণা ছিল ৩৩৬-এরও বেশি। যা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে পরিবেশবিদরা।
সম্প্রতি, সুইজারল্যান্ডের আইকিউ এয়ার নামে একটি সংস্থাও কলকাতায় দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই সংস্থা সারা বিশ্বের মহানগরগুলিতে দূষণ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১০ টি শহরের মধ্যে বাতাসের গুণগতমান সবচেয়ে খারাপ দিল্লি, কলকাতা এবং মুম্বইয়ে। কলকাতার ফুসফুস বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে এমন অনেক রোগী তাঁরা পাচ্ছেন, যাঁদের ফুসফুস দূষণের ফলে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।
পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, বাতাসে সূক্ষ্ম ধূলিকণা ১০০ মাইক্রোন পর্যন্ত থাকলে তা নিরাপদ। ১০১ থেকে ২০০-র মধ্যে থাকলে সে ক্ষেত্রে নিরাপদ না হলেও সহনশীল। তবে ২০১ থেকে ৩০০-র মধ্যে হলে তা খারাপ। আর যদি প্রতি ঘনমিটারে বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে থাকে, তাহলে তা খুব খারাপ।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন মামলায় দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। দূষণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের। কোভিডের ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা অনেকটাই কমে যায় ফলে বাতাসে দূষণ বেড়ে গেলে কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের সমস্যা বাড়বে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও যে সমস্ত ব্যক্তিদের ফুসফুস দুর্বল, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।