কম দামে ভালো জমির টোপ দিয়ে নিউটাউনে সক্রিয় হয়ে উঠছে কিছু প্রতারণা চক্র। এই চক্র হিডকোর জমি বেআইনিভাবে বিক্রি করে প্রতারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই জমি কেলেঙ্কারির ঘটনা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। একই সঙ্গে জমি কেনা নিয়ে সাধারণ মানুষকেও সতর্ক করলেন।
আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে দখল হওয়া জমি পুনরুদ্ধার করছে KMDA, রাজস্ব বাড়াতে করা হবে নিলাম
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে পুরমন্ত্রী স্বীকার করেছেন শুধু হিডকোর জমিই নয়, কেএমডিএ এবং নগরোন্নয়ন দফতরের কিছু জমি মাঝে মধ্যেই বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে প্রতারকরা। সেখানে সস্তায় ভালো জমি বিক্রির জন্য ক্রেতাদের তোপ দেওয়া হচ্ছে। আর সেই প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকেই। মন্ত্রী জানান, এই ঘটনায় পুলিশ পদক্ষেপ করছে। এফআইআরও করেছে। তিনি জানান, ৩ বছর আগে দিল্লি থেকে প্রতারিত এক ব্যক্তি কলকাতায় এসে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরে তিনি থানায় অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মন্ত্রী বলেন, ‘মূলত মানুষের অজ্ঞতার অভাবেই এই ধরনের চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু হিডকোতেই নয়, হাওড়া শিল্প তালুকেও এইভাবে প্রতারকরা জমি বিক্রি করছে বলে মন্ত্রী স্বীকার করে নেন। এপ্রসঙ্গে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘যারা হিডকোর জমি কিনতে চান তাঁদের উদ্দেশ্যে বলছি। এরকমভাবে গোপনে হিডকোর কোনও প্লট বিক্রি হয় না। মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত বা মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া হিডকোর কোনও জমির একটুও বিক্রি হয় না। জমি বিক্রির আগে প্রকাশ্যে টেন্ডার করে ঘোষণা করা হয়। তাছাড়া ওয়েবসাইটেও দেওয়া হয়।’
প্রসঙ্গত, নিউটনের বেশ কিছু জমি এর আগেও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে হিডকোর প্রয়োজনীয় নথি জাল করে ক্রেতাদের সেই জমি বিক্রি করা হয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। সেই মতো জমি রেজিস্ট্রিও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জমি মিউটেশন করার সময় জানা যায় হিডকোর তরফে এই ধরনের কোনও জমি বিক্রি করা হয়নি। তখনই ক্রেতাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
যদিও বিরোধীদের প্রশ্ন, এই জমি বিক্রির ঘটনায় হিডকোর একাংশ জড়িত না হলে কোনটি ফাঁকা বা কোনটি বিক্রি হয়েছে তা প্রতারকরা কীভাবে জানবে? সে প্রশ্নের উত্তরে বিধানসভায় পুরমন্ত্রী বলেন, ‘হিডকোর জমির তালিকার বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইট থেকেই পাওয়া যায়।’ তবে সন্দেহ ওঠায় পুরমন্ত্রী বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বার্তা, ‘যারা হিডকোর জমি কিনতে চান, তাঁরা সকলে সরকারি দফতরে আসুন। এখানে যোগাযোগ না করলে আপনারা প্রতারণার ফাঁদে দেবেন।’