আজ ব্রিগেডের ময়দান থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় বড় চমক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস যে একাই ৪২টি লোকসভা আসনে লড়বেন সেটা আগেই ঘোষণা করেছিল। আজ, রবিবার দুপুরে তারই সাক্ষী থাকলেন রাজ্যের মানুষজন। মালদায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। একইরকমভাবে বহরমপুরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর জন্য আসনটি নজরকাড়া হয়ে উঠল। এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হলেন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে কংগ্রেসের পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এটাই মাস্টারস্ট্রোক হিসাবে দেখছেন অনেকে।
এদিকে বহরমপুর থেকে টানা পাঁচবারের জয়ী সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। ২০১৪ সালে কংগ্রেসের যখন দুরবস্থা, তখনও বহরমপুরে ৩ লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন কংগ্রেস সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে অধীর চৌধুরীকে হারাতে শুভেন্দু অধিকারীর উপর দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু কংগ্রেস থেকে বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে ভাঙিয়ে এনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু সমস্ত শক্তি উজাড় করে দিয়েও অধীর চৌধুরীকে হারাতে পারেননি। অধীর চৌধুরী প্রায় ৯০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জেতেন।
আরও পড়ুন: কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন সৌমিত্র খাঁ, প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতাই বিষ্ণুপুরে তৃণমূল প্রার্থী
অন্যদিকে এমন হেভিওয়েট প্রার্থী যে তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়াবে এটা কিন্তু কল্পনাও করতে পারেননি অধীর চৌধুরী। তবে তিনি আত্মবিশ্বাসী। তাই ইউসুফ পাঠান বহরমপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন শুনে হেসেছেন। আর এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ভালই হল তো। আমিও বিখ্যাত হয়ে যাব।’ অর্থাৎ অধীর চৌধুরী হারলে বা জিতলে দুটি ক্ষেত্রেই তিনি বিখ্যাত হবেন। কারণ ইউসুফ পাঠান ক্রিকেট তারকা। ভারতের নাম উজ্জ্বল করা ক্রিকেটার। গোটা বিশ্ব তাঁকে এক ডাকে চেনে। তাই তাঁর কাছে হারলেও বিখ্যাত হওয়া যাবে। জিতলে তো অবশ্যই বিখ্যাত হবেন। এটাই বোঝাতে চেয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ।
এছাড়া ইউসুফ পাঠান এখন শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন। তিনি শনিবার রাতে কলম্বো থেকে মুম্বইয়ে আসেন। তার পর রবিবার সকালে পৌঁছন কলকাতায়। ইউসুফের সঙ্গে আজ রবিবার ব্রিগেডেই প্রথমবার কথা হয় মমতা–অভিষেকের। তবে এই বাংলায় প্রার্থী হওয়ার নেপথ্যে অন্য কাহিনী আছে। সূত্রের খবর, বাংলার আর এক জনপ্রিয় ক্রিকেটারের স্ত্রীকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বাড়িতে রাজনীতি প্রবেশ করুক চাননি তিনি। তখন ইউসুফ পাঠানের নাম নিয়ে আলোচনা হয়। ওই ক্রিকেটার সম্প্রতি নবান্নে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তার পরই তৈরি হয় ব্লু–প্রিন্ট। ইউসুফের কাছে প্রস্তাব পৌঁছতেই রাজি হন তিনি। এখন বহরমপুরের প্রার্থী।