রবিবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনাতেও মিলল না রফাসূত্র। জ্বালানি তেলে জিএসটি চালু, বাসে উঠলেই ১৪ টাকা ভাড়া–সহ একাধিক দাবিতে এখনও ধর্মঘটে অনড় পশ্চিমবঙ্গের বাস মালিক সংগঠনগুলি। যদিও তাঁরা আশাবাদী যে তাঁদের দাবি বিবেচনা করে ফের বৈঠকে বসবে সরকার।
আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি ৭২ ঘণ্টা ব্যাপী রাজ্যে বাস ও মিনি বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাস ও মিনিবাস মালিক সংগঠন। জ্বালানি ওপর জিএসটি বসানো, বাস ভাড়া বাড়ানো–সহ একাধিক দাবিতে ডাক দেওয়া হয়েছে এই ধর্মঘটের। যা নিয়ে ইতিমধ্যে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। সরকার চেষ্টা করছে একটা সমাধানে আসার। কিন্তু রবিবারও অধরা রইল রফা সূত্র। ৭২ ঘণ্টা বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় রইলেন বাস মালিকরা।
রবিবার কলকাতায় লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ছিল ৮৭ টাকা ১১ পয়সা। এবং এদিন ৩৬ পয়সা বেড়ে ডিজেলের দাম হয়েছে ৮৯ টাকা ৮৪ পয়সা প্রতি লিটার। বাস মালিকদের মতে, পেট্রোল, ডিজেলে জিএসটি বসানো হলে অনেকটাই দাম কমবে। এই ব্যাপারটিকে সামনে রেখে জ্বালানি তেলে জিএসটি বসানোর দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যে রাজ্য পরিবহণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে চিঠি দিয়েছে বাসমালিকদের পাঁচটি সংগঠন। তার পরই রবিবার বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে রাজ্য সরকার। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহণ সচিব ও পরিবহণ দফতরের অন্য আধিকারিকরা। কিন্তু সেই বৈঠকও কার্যত বিফলে গেল। বাস মালিক সংগঠনের দাবি, দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরও কোনও রফাসূত্র মেলেনি।
এদিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘১৯ তারিখে আমরা যে জায়গায় ছিলাম আজও সেই জায়গায় আছি। কিন্তু আলোচনা শেষ হয়নি। এদিনের আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। সেই প্রস্তাবের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে আগামী এক–দু’দিনের মধ্যে ফের আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিনই আমরা বুঝতে পারব ভবিষ্যতে এই শিল্পের কী অবস্থা হবে।’ যদিও এদিনের বৈঠক নিয়ে সরকারের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বেড়ে চলা দামের জেরে মাথায় হাত পড়েছে সাধারণ মানুষের। আর মরার ওফর খাঁড়ার ঘায়ের মতো বেড়ে চলেছে জ্বালানি তেলের দাম। যার ফলে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম ফের বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাসের শেষে টানা ৭২ ঘণ্টা বাস ধর্মঘট হলে দুর্ভোগ যে কোন পথে যাবে তা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।