বর্ষা শুরু হতেই কলকাতা পুরসভার অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় মশাবাহিত রোগ। কারণ বিগত বছরগুলিতে বর্ষায় বহু মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন কলকাতায়। যার মধ্যে গত বছর মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল ডেঙ্গি। তবে শুধু কলকাতাতেই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেও মশাবাহিত রোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। পাশাপাশি বহু মানুষের মৃত্যুও হয়েছিল। এবার বর্ষায় মশাবাহিত রোগের বাড়বাড়ন্ত রুখতে যাতে কোনওভাবেই জল না জমে না থাকে সেদিকে নজর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। এবার কলকাতা পুলিশকেও এনিয়ে সচেতন হতে বলল কলকাতা পুরসভা। এ বিষয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে চিঠি দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন: বর্ষা পড়তে না পড়তেই পাহাড়ে চোঙ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, ৫ বছরে আক্রান্ত সবথেকে বেশি
সাধারণত থানার সামনে অনেক পরিত্যক্ত গাড়ি পড়ে থাকে। সেই গাড়ির জমা জলে বংশবিস্তার করে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা। ফলে এই সমস্ত পরিত্যক্ত গাড়িগুলি মশার বংশবিস্তারের জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেই গাড়িগুলি যাতে সরিয়ে নেওয়া হয় অথবা নিয়মিত গাড়িগুলি পরিষ্কার করা হয় তা নিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন মেয়র। প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র থানার সামনেই পরিত্যক্ত গাড়ি থাকে তা নয়, বহু এলাকায় এরকম পরিত্যক্ত গাড়ি পড়ে থাকে। সে বিষয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রতিটি ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধিদের সচেতন হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বর্ষা আসতেই পুরসভার তরফে থানার সামনে থেকে পরিত্যক্ত গাড়ি সরিয়ে ফেলার জন্য পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়। যদিও পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যে বেশিরভাগ থানার সামনে থেকে পরিত্যক্ত গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র হাতে গোনা কয়েকটি থানার সামনে পরিত্যক্ত গাড়ি পড়ে রয়েছে। সেগুলিও দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে।
এছাড়াও, কোনও বাড়িতে যাতে জল না জমে তা নিয়ে বারবার নাগরিকদের সতর্ক করেছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু তারপর দেখা যায়, অনেকেই সেই কথায় কর্ণপাত করছেন না। ফুলের টব হোক বা ভাঙা আসবাবপত্র, সেখানে জল জমে বংশবিস্তার করছে ডেঙ্গি মশার লার্ভা। ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত অবাধ্য নাগরিকদের শায়েস্তা করতে কড়া পদক্ষেপ করেছে কলকাতা পুরসভা। কোনও বাসিন্দার বাড়িতে এরকম ভাবে জল জমতে দেখা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে পুর আদালতে মামলা করবে কলকাতা পুরসভা। সেক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা পর্যন্ত করা হতে পারে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই গত পাঁচ মাসে ৩৫ জনকে মোটা টাকার জরিমানা দিতে হয়েছে। প্রথমে জমা জল পরিষ্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাকে সতর্ক করবে কলকাতা পুরসভা। এরপরে তারা পুরসভার কথায় কর্ণপাত না করলে ৪৯৬ এ ধারায় নোটিশ পাঠানো হবে। সেক্ষেত্রেও কাজ না হলে পুর আদালতে মামলা করবে কলকাতা পুরসভা। স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এবছর জানুয়ারি থেকেই মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে প্রচারে নেমেছে কলকাতা পুরসভা।