বাঙুর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজ হয়ে গেলেন। আর এই ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ল। কারণ ওই রোগীর পরিবারের সদস্যরা বিকেলে দেখা করার সময় হাসপাতালে এসে দেখেন বেডে নেই রোগী। তাহলে কোথায় গেল চিকিৎসাধীন রোগী? আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। গোটা হাসপাতাল খুঁজেও পাওয়া যায়নি ওই ব্যক্তির সন্ধান। তবে এই রোগী নিখোঁজের বিষয়টা জানেই না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর পরিবারের থেকে জানতে পেরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হয়। তখনই দেখা যায়, হাসপাতাল থেকে দুপুরেই বেরিয়ে যাচ্ছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ রোগী। তাঁর নাম বাদলচন্দ্র দাস। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। এখনও নিখোঁজ বৃদ্ধ। তদন্তে নেমেছে লালবাজার।
এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা হাসপাতালে ঢি ঢি পড়ে গিযেছে। দোলের দিন ওই অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী নিখোঁজ হয়ে যান। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসুক সেটা চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেটা ঘটে যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই ঘটনায় দক্ষিণ কলকাতার এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। লেক গার্ডেন্সের লস্করপুরের বাসিন্দা বাদলচন্দ্র দাস। ২০০৩ সালে তাঁর চাকরি থেকে অবসর হয়। ইদানিং কয়েক বছর ধরে সবকিছু ভুলে যাচ্ছিলেন। এই সমস্যা নিয়ে বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বৃদ্ধ। ২৪ মার্চ বাঙ্গুর হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৯ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয় বাদলবাবুকে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
আরও পড়ুন: তৃণমূল–বিজেপির প্রচার তালিকায় জমজমাট ভোটের ময়দান, কাদের নাম উঠে এল?
অন্যদিকে বাদলবাবু চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিখোঁজ হলেন। যার দায় এড়াতে পারে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একজন অসুস্থ বৃদ্ধ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন। কেউ টের পেলেন না? উঠছে প্রশ্ন। শ্বশুর বাদলবাবুর অসুস্থতার কথা শুনে রাজস্থান থেকে কলকাতায় আসেন মেয়ে–জামাই। সোমবার দোলের দিন বিকেলে তাঁরা রোগীকে দেখতে যান। কিন্তু তাঁকে বেডে খুঁজে পাননি কেউ। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। হাসপাতাল এই খবর শুনে চাপে পড়ে যায়। তখন সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বিকেল ৪টে ৫৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন রোগী। তাঁর হাতে জলের বোতল। তখনই গল্ফগ্রিন থানায় খবর দেন নিখোঁজের পরিবার। মিসিং ডায়েরি পর্যন্ত করা হয়।
এই নিখোঁজের ঘটনা নিয়ে বাদলবাবুর জামাই অলোক দাস বলেন, ‘গল্ফগ্রিন থানার সহায়তায় আমরা লালবাজারের মিসিং পার্সনস স্কোয়াডে যোগাযোগ করি। পুলিশ অফিসাররা তদন্তে নেমেছেন। আমরা আতঙ্কে, ভয়ে আছি।’ আসলে কয়েকদিন আগে ভবানীপুরের ব্যবসায়ী নিখোঁজ এবং খুনের ঘটনার পর আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। নিখোঁজ হলেই সেই পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে ভুগছেন। বাদলবাবুর পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এম আর বাঙ্গুরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। রোগীকে খুঁজে পেতে পুলিশ কাজ করছে।