শক্তিরূপী দেবীর পুজোয় জাতি-ধর্ম-বর্ণভেদে মানুষ মিলিত হন। পুজোর প্রতিটি অংশ, প্রতিমার সাজ থেকে শুরু করে মণ্ডপসজ্জা সবেতেই নানা স্তরের মানুষ সমানভাবেই অংশ নেন। সম্প্রতির বার্তা দিতে এবার মুসলিম মেয়ের কুমারী পুজো করতে চলেছে নিউ টাউনের মৃত্তিকা ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তারা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নবমীতে কুমারী পুজোর সময় একটি মুসলিম মেয়েকে দেবী দুর্গা হিসাবে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাবের মহিলাদের সমিতি।
আরও পড়ুন: খুঁটিপুজোয় মুসলিম মেয়েকে দেবীরূপে আরাধনা সিঁথিতে, ‘স্বামী বিবেকানন্দ কাশ্মীরে..’
জানা গিয়েছে, পাথুরিয়াঘাটার বাসিন্দা ৮ বছর বয়সি নাফিসাকে প্রথমবারের মতো কুমারী পুজোর জন্য বেছে নিয়েছে মৃত্তিকা ক্লাবের মহিলাদের সমিতি। ক্লাবের এক সদস্য বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হল ঐক্যের প্রচার করা, সমাজের সমস্ত বিভাজন দূরে সরিয়ে দেওয়া এবং ভ্রাতৃত্বের একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া। আমরা নিজেরাই আগের দুর্গাপুজো কমিটিতে বিভাজনমূলক রাজনীতির শিকার হয়েছিলাম। নারীরা উপেক্ষিত বলে মনে হয়েছিল। তাই, আমরা ভেঙে পড়েছিলাম এবং আমরা নিজেদের সংগঠন করেছি। এবার নিজেরা পুজোর আয়োজন করেছি।’
সাধারণত শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ মেয়েদেরই 'কুমারী' হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু ১৮৯৮ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কাশ্মীর বেড়াতে গিয়ে ছিলেন ডাল লেকের একটি হাউসবোটে। সেখানকার মাঝি ছিলেন এক মুসলিম ব্যক্তি। তিনিই সন্ন্যাসীর আতিথেয়তার দায়িত্বে ছিলেন। ওই মাঝির এক ছোট্ট কন্যা ছিল। স্বামী বিবেকানন্দ মেয়েটিকে অত্যন্ত স্নেহ করেছিলেন। তাঁকে দেবী দুর্গারূপে পুজো করা হয়। বিবেকানন্দ শ্রীনগরে কুমারী পুজো দিয়েছিলেন। তিনি আচারের অংশ হিসাবে ছোট্ট মেয়েটির পা স্পর্শ করার জন্য প্রণাম করেছিলেন। ক্লাবের এক সদস্য বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকেই বেলুড় মঠের শিক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণিত। স্বামীজি যখন এক শতাব্দীরও বেশি আগে একজন মুসলিম মেয়ের কুমারী পুজো করেছিলেন। তাহলে আমরা কেন করতে পারি না।’