ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়াকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠল নিউটাউনে। আজ, শুক্রবার নিউটাউন এলাকায় একটি বাড়ির খাটের তলায় স্যুটকেসের মধ্যে থেকে ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর মুখ সেলোটেপ দিয়ে বাঁধা ছিল বলে অভিযোগ। ওই পড়ুয়াকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার। নিউটাউনের পড়ুয়াকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। তবে নিউটাউন সেকেন্ড লেনের তারুলিয়াতে গৌতম নামের এক যুবকের ভাড়া বাড়ি থেকে হাত–পা বাঁধা, মুখে সেলোটেপ দেওয়া অবস্থায় একটি স্যুটকেসের মধ্যে খাটের নীচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গত ৪ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল এই যুবক। গৌতম–সহ চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিউটাউন থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত চার তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল সাজিদ হোসেন নামের এই পড়ুয়া। নিহত পড়ুয়া মালদার বৈষ্ণবনগর এলাকার বাসিন্দা। ডাক্তারির নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সাজিদ হোসেন নিউটাউন থানা এলাকার মহিষবাথান বক্স সেতুর কাছে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। ৫ অক্টোবর নিউটাউন থানায় নিয়োঁজের অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রের পরিবার। এরপর বিকেলে তাঁর মোবাইল থেকে একটি ছবি পাঠানো হয় পরিবারকে। যেখানে মুখে সেলোটেপ লাগানো অবস্থায় দেখা যায় ছাত্রটিকে আটকে রাখা হয়েছে। তখন মুক্তিপণের জন্য ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। সেই ছবি কিছুক্ষণ পর অল ডিলিট করা হয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? আজ শুক্রবার সকালে ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে গৌতম এবং পাপ্পু সিংকে। এরাই এই অপহরণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ওই পড়ুয়ার খোঁজ পাওয়া না যাওয়ায় মেসের বন্ধুরাই সাজিদের পরিবারকে খবর দেন। তার পরই সাজিদের পরিবার নিউটাউনে চলে আসেন। আর নিউটাউন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। কিন্তু তদন্ত চলাকালীনই মৃতদেহ উদ্ধার হল। এখানে কয়েকজনের সঙ্গে সাজিদের বন্ধুত্ব হয়। বাড়ি থেকে পড়ুয়াকে টাকা পাঠানো হতো। সেই টাকার লোভেই সাজিদকে অপহরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: বি.টেক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ, ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে নির্যাতন
আর কী জানা যাচ্ছে? এখানে পড়তে আসার সূত্রে বেশ কিছু বন্ধুও জুটে যায়। তখন তারা দেখতে পায় এই সাজিদের বাড়ির লোকজন মোটা অঙ্কের টাকা পাঠায়। সেই দেখে অভিযুক্তরা বুঝতে পারে প্রচুর টাকা আছে এই পরিবারের। তাহলে অপহরণ করলে মুক্তিপণ বাবদ মোটা টাকা দুর্গাপুজোর আগে হস্তগত করা যাবে। এরপরেই ছক কষা হয়। গৌতম নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে নিউটাউন থানার পুলিশ। এই গৌতম একজন চা–বিক্রেতা। নিউটাউন মহিষবাথান বক্স ব্রিজের কাছে চায়ের দোকান গৌতমের। গৌতমের সঙ্গে সাজিদের চায়ের দোকানে আলাপ। পুলিশের জেরায় গৌতম স্বীকার করেছে, মদ খাইয়ে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়। তারপর মুখে সেলোটেপ লাগানো হয়।