করোনাভাইরাসের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ স্কুলে গিয়ে পঠনপাঠন। অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে সর্বত্র। এখান থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কবে স্কুল খোলা উচিত? এমনকী উপযুক্ত সময় কোনটা? এই বিষয় নিয়েই প্রশ্নটির মুখোমুখি হলেন প্রবীণ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ তথা প্রতীচী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, ‘এটা কঠিন প্রশ্ন। তাই জবাব চট করে দিয়ে ফেললে তা খেলো করা হয়। আমি যেখানে থাকি (আমেরিকার বস্টন), সেখানেও বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া চলছে।’ সুতরাং স্কুল কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে তা তিনিও বলতে পারলেন না।
তবে তিনি মনে করেন, পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অসুখ বাড়তে পারে। সেটা ভাল হবে না। তাই বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবনা–চিন্তার প্রয়োজন আছে। এই বিষয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সব ঠিক থাকলে পুজোর পরে স্কুল খোলা যেতে পারে। তবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমি যদি ডাক্তারিতে পারদর্শী হতাম এবং কৃতিত্বের পরিচয় দিতাম, তা হলে এই বিষয়ে চট করে বলতে পারতাম। কিন্তু এই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার যোগ্যতা আমার নেই।’
এদিন তিনি বিভিন্ন জেলায় পড়ুয়াদের জন্য ছোট ছোট স্তরে স্কুলের বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়াকে প্রশংসা করেছেন। আর জানান, প্রতীচী ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘রিইম্যাজিনিং লার্নিং’ শীর্ষক আলোচনাচক্রে শিক্ষাব্যবস্থাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করা হয়। পুষ্টি, পরিবেশ, মানসিক স্বাস্থ্য, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চাহিদা— সব কিছুই সেখানে উঠে আসে।
স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূল্যায়ন হল শেষের কথা। প্রথম কথা, শিখছি কীরকম, বুঝছি কীরকম, কীভাবে এগোতে পারছি। শেখার ব্যবস্থা কীরকম করা যাচ্ছে। এই বিষয়গুলিতে নজর দিয়েই মূল্যায়নের কথা ভাবতে হবে। মূল্যায়নকেই সব থেকে বড় জিনিস ভাবা হোক, এটা আমরা চাইব না।’ সুতরাং পরিস্থিতি বিচারে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে তোলাই উচিত বলে তিনি মনে করেন।