এখন টমেটো থেকে কাঁচালঙ্কা এবং সব সবজির দাম আকাশছোঁয়া। বাজারে গিয়ে ছ্যাঁকা খাচ্ছে বাঙালি। সেখানে আলুর দাম একটু সস্তা হলেও অন্যান্য বছরের থেকে দাম বেশি। এই অগ্নিমূল্যের বাজারে আলুর দাম তুলনামূলক কম বলা যেতে পারে। কারণ রাজ্য সরকারের বিপণন নীতি এবং সুফল বাংলায় কম দামে আলু মিলছে। কিন্তু সেটাই খোলা বাজারে দাম বেশি। সরকারি তৎপরতায় আলুর দামে স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে। আর আলু চাষিরাও এবার দাম পেয়েছেন ভালই। কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যা দামের ট্রেন্ড তাতে দুর্গাপুজোর মরশুমে আলুর দাম সাধারণের নাগালেই থাকার কথা। রাজ্যের হিমঘরগুলিতেও ভাল পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে। সুতরাং দাম কম থাকার কথা।
কেমন অবস্থা রয়েছে আলুর? এই বছরে আলুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। মার্চ মাস থেকে রাজ্যজুড়ে হিমঘরগুলিতে আলু মজুতের কাজ শুরু হয়। এখন পশ্চিমবঙ্গে আলু সংরক্ষণের জন্য ৪৭০টি হিমঘর আছে। এখনও পর্যন্ত ৬৪ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। মে মাস থেকে হিমঘরের মজুত আলু বাজারে ছাড়া হচ্ছে। মে, জুন, জুলাই এবং অগস্ট এই চার মাসে ৪৬ শতাংশ মজুত আলু বাজারে ছাড়া হয়েছে। সুতরাং হিমঘরগুলিতে এখন ৫৪ শতাংশ আলু মজুত আছে। পুজোর মরশুমে এই আলু যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে বের করা হবে। তাতে চাহিদা মিটে যাবে বলে মনে করছে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর।
আলুর দাম কি বাড়বে? হিমঘর সংগঠন সূত্রে খবর, গত দু’বছর আলু মজুত করতে গিয়ে বড় লোকসান হয়েছিল। তাই আতঙ্ক রয়েছে। সেটা যদি ঘটে তাহলে আলুর দাম অবশ্যই বাড়বে। এমনকী নাগালের বাইরে পর্যন্ত চলে যেতে পারে। তাই এখন পর্যাপ্ত আলু বের করে দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু বিপুল পরিমাণ আলু বাজারে বেরিয়ে এসেছে তাই দামে স্থিতাবস্থা রয়েছে। এটাই যদি চলতে থাকে তাহলে আর আলুর দাম বাড়বে না। বরং কম দামে আলু মিলতে পারে। এই বিষয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ সংগঠনের অন্যতম কর্তা পতিতপাবন দে বলেন, ‘৩১ অগস্ট পর্যন্ত হিমঘরে ৫৪ শতাংশ আলু মজুত রয়েছে। তাতে দাম না বাড়ার সম্ভাবনাই প্রবল।’
আরও পড়ুন: চারদিন বউদির দেহ আগলে ননদ, আবার রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া দেখা গেল হুগলিতে
আর কী জানা যাচ্ছে? উৎসবের মরশুমে আলুর চাহিদা বাড়ে। সেটা মজুত থাকলে দাম ঠিকই থাকে। আর না থাকলে বাড়ে আলুর দাম। যদিও কৃষি বিপণন দফতরের কর্তাদের দাবি, খুব ভাল মানের আলু হিমঘর থেকে বাজারে আসছে। তাও সস্তা। মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে। কিন্তু সেটাই খোলা বাজারে ২০ থেকে ২২ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সুফল বাংলার স্টলে ১৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। সেটা এবার ১৮ টাকায় নেমে যাওয়া উচিত। কিন্তু কিছু মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌলতে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। উৎসবের মরশুমে আলুর দাম নাগালের বাইরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।