করোনা আবহেও শব্দবাজির উপদ্রবেই কি কাটবে কালীপুজো এবং দীপাবলি? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য জুড়ে। কারণ করোনার জেরে উৎসবের মরসুমে পুলিশ শব্দবাজি পরীক্ষা করতে পারেনি। প্রত্যেকবার যেখানে দুর্গাপুজোর আগেই বাজি পরীক্ষা হয়ে যায় কলকাতায়, সেখানে এবার হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তটাই এখনও নিয়ে উঠতে পারেনি পুলিশ! তাই রাজ্যবাসীর মনে এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে।
এখানেই শেষ নয়। অনেকের প্রশ্ন, বিনা পরীক্ষায় শব্দবাজি বিক্রি শুরু হলে শব্দ এবং বায়ুদূষণের পাশাপাশি হঠাৎ ফেটে গিয়ে বিপদ ঘটবে না তো? উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে কালীপুজোর রাতে তুবড়ি ফেটে বেহালায় আদি দাস নামে পাঁচ বছরের শিশুর এবং কসবায় দীপককুমার কোলে নামে ৪০ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। যা আজও সবার মনে আছে। কতটা মর্মান্তিক হয়েছিল সেই ঘটনা।
প্রতি বছর বাজি বাজারের আয়োজন করা হয়। তাই প্রশ্ন উঠেছে, এবার বাজারই যদি না বসে, তা হলে অসাধু বিক্রেতাদের আটকানো কী সম্ভব হবে? পুলিশ সূত্রের খবর, টালা, শহিদ মিনার, বেহালা, বিজয়গড় এবং কালিকাপুর— কলকাতায় এই পাঁচটি জায়গায় সরকার অনুমোদিত বাজি বাজার বসে। তার জন্য দুর্গাপুজোর আগেই বাজি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে পুলিশ। এই বছর সেই পরীক্ষাই হয়নি। তাই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সম্পাদক তথা আইনজীবী শুভঙ্কর মান্না জানান, বাজি পরীক্ষা বা বাজি বাজার বন্ধ থাকলে শুধু নিষিদ্ধ বাজি বিক্রিই নয়, অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে নিজের দোকান বা বাড়ি থেকে বাজি বিক্রি করতে পারেন। বড়বাজারের বহু ব্যবসায়ীরই ১৫০ কিলোগ্রাম বাজি বিক্রির লাইসেন্স রয়েছে। সুতরাং ঘিঞ্জি জায়গায় বাজি মজুত করে বিক্রি করাটা বিপজ্জনক। এই বিপদ বুঝেই দমকল ব্যক্তিগতভাবে বাজি মজুত করে বিক্রির ছাড়পত্র দেয়নি।
আর টালার যে পার্কে বাজি পরীক্ষা হয় বা বাজি বাজার বসে, সেটি কলকাতা পুরসভার। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘মেলা বা কার্নিভাল করার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে বাজি বাজারকে মেলা হিসেবে না ধরে তার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে কিছু করা যায় কি না, ভাবা হচ্ছে।’