পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে যখন বাংলায় জমজমাট লড়াই শুরু হতে চলেছে তখন এখানে রাজ্যসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৪ জুলাই রাজ্যে মোট ছ’টি আসনে ভোট হবে। একটি আসনে উপনির্বাচন হবে। ওই দিনই হবে ভোট গণনা। কিন্তু রাজ্যসভায় যাওয়া নিয়ে এখন বিজেপির অন্দরে চরমে উঠেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কারণ এই রাজ্যসভার টিকিট পেতে চান মিঠুন চক্রবর্তী এবং স্বপন দাশগুপ্ত। আর তাই নিয়ে এখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। সমস্যাটি হল—এখানে একটি আসন। আর তিনটি গোষ্ঠী। ফলে টিকিট কে পাবেন? তা এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এদিকে আগামী ১৮ অগস্ট পশ্চিমবঙ্গের ছয় সাংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই ওই আসনগুলিতে নির্বাচন হবে। রাজ্যে একটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হয়েছিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হবে। কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আর ওই আসনটিতে এবার বিজেপি তাঁদের সদস্য পাঠাবে রাজ্যসভায়। কিন্তু একটি আসনের দাবিদার একাধিক। বিজেপির এখানে তিনটি গোষ্ঠী—এক, সুকান্ত মজুমদার। দুই, শুভেন্দু অধিকারী এবং তিন, দিলীপ ঘোষ। এই তিন গোষ্ঠীর কাছে এখন তিনটি মুখ রয়েছে। তবে কার গোষ্ঠী জিতবে এখনই বলা যাচ্ছে না।
রাজ্যসভার তিনটি মুখ কারা? অন্যদিকে এখন এই টিকিট পেয়ে রাজ্যসভায় যেতে মরিয়া স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি আগেও রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। তিনি আবার অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাছাড়া নয়াদিল্লির নেতাদের সঙ্গে ভাল হাত রয়েছে। তাছাড়া তিনি এখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গোষ্ঠীতে আছেন। সেখানে মিঠুন চক্রবর্তীও চান রাজ্যসভায় যেতে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে আগে রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন। একুশের নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং প্রচার করেন। তিনি আবার শুভেন্দু অধিকারীর গোষ্ঠীতে আছেন। তাই তাঁর হয়ে নয়াদিল্লিতে দরবার করে এসেছেন বিরোধী দলনেতা।
আরও পড়ুন: একুশে জুলাইয়ের ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করল তৃণমূল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বড় ঘোষণা
আর কী জানা যাচ্ছে? তৃতীয় নামটি হল অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ গোষ্ঠীর লোক। বোলপুর বিধানসভা থেকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হেরেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের চন্দ্রনাথ সিনহার কাছে। তারপর থেকে বাংলায় খুব একটা দেখা যায়নি। এখানে এসেছিলেন বটে। তবে খুব কম। নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা রয়েছে। তাই তিনি এবার যেতে চান বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভায়। সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁর নামে সুপারিশ করেছেন কয়েকজন। একটি আসনে জেতার মতো পর্যাপ্ত আসন আছে গেরুয়া শিবিরের হাতে। তবে সেখানে কে শেষ হাসি হাসবেন এখন সেটাই দেখার।