সল্টলেকে জিসি ব্লক। ঠিকানা এটাই। যেখানে ঘটে গিয়েছে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে বৃদ্ধ চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ। গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকের স্ত্রীর দেহের পাশেই মিলেছে রক্তমাখা ছুরি। যে ছুরি দিয়ে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। খবর পেয়েই সেখানে দেহ উদ্ধার করতে গিয়েছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত যে, এই দম্পতিকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু খুনের নেপথ্যে কে? কারণ কী? সেটা জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এদিকে এই খুনের ঘটনার মোটিভ খুঁজছে পুলিশ। তাহলেই গোটা ঘটনা সামনে আসবে বলে মনে করছেন পুলিশের কর্তারা। সল্টলেকে তিন নম্বর সেক্টরের জিসি ব্লকের বাসিন্দা যদুনাথ মিত্র এবং তাঁর স্ত্রী মন্দিরা মিত্র। বুধবার সকালে মন্দিরা দেবীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। বাড়ি থেকে যদুনাথ বাবুকেও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তিনি মৃত না জীবিত সেটা এখনও জানা যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ৭৮ বছরের যদুনাথবাবু পেশায় চিকিৎসক। বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে তিনি থাকতেন। মন্দিরা দেবীর দেহের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার হয়েছে। খুনের ঘটনার তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকলেও পাহাড়ে আছেন শ্রীংলা, কোন সমস্যা মেটাতে চান?
অন্যদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘ভদ্রমহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যিনি খুন হয়েছেন। আর তাঁর স্বামী এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখানের প্রতিবেশিরা খবর দেন আমাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তাঁরা। এখানে বেশ কয়েকটি ছুরি এবং একটি সুইসাইড নোট মিলেছে। সেটা চিকিৎসকের লেখা। ময়নাতদন্ত করলে সব সামনে আসবে। মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় লেখা রয়েছে সুইসাইড নোটে। চোখের চিকিৎসক। কিছু নিশ্চয়ই সমস্যা ছিল। দুই মেয়ের মধ্যে একজন এসেছেন। ঘর রক্তে ভেসে গিয়েছে। তদন্তের সময় এর থেকে বেশি কিছু বলা উচিত নয়।’
এছাড়া প্রতিবেশি সূত্রে খবর, কাজের লোক বাড়ি এসে এই রক্তাক্ত ঘটনা দেখে এলাকার মানুষজনকে ডাকেন। তখন এখানে এসে দেখা যায়, স্বামী–স্ত্রী দু’জনেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। ছুরি দিয়ে একাধিক আঘাতের ফলেই এই খুন। এমন হাড়হিম ঘটনা দেখে পুলিশের খবর দেওয়া হয়। বৃদ্ধ এখনও বেঁচে আছেন বলে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তাঁর গায়েও একাধিক ছুরির আঘাত রয়েছে। যদি এই বৃদ্ধ চিকিৎসক প্রাণে বেঁচে যান তাহলে তাঁকে জেরা করলে একাধিক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করেছেন তদন্তকারীরা।