চাকরিরত অবস্থায় বাবা মারা গেলে তাঁর সরকারি চাকরি পেতে পারে ওই ব্যক্তির সৎ ছেলেও। এক মামলার প্রেক্ষিতে এমনটা জানাল কলকাতা হাইকোর্ট।
চাকরিরত অবস্থায় সৎ বাবা মারা যাওয়ার পর এক ব্যক্তি বাবার সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। ওই ব্যক্তি যেহেতু তাঁর সৎ বাবা, তা চাকরি পাওয়া যাবে না বলেই জানিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর। এর পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং মহম্মদ শব্বর রশিদী তাঁদের পর্যবেক্ষণে বলেন পুত্র শব্দটির সঙ্গে জৈবিক পুত্রের পাশাপাশি সৎ, দত্তক নেওয়া এমনকি অবৈধ সম্পর্কের পুত্রসন্তানও অন্তর্ভুক্ত।
আবেদনকারীর মা বীথি কর ১৯৮১ সালে তাঁকে এবং তাঁর বোনকে জন্ম দেন। সেই সময় তিনি গণেশচন্দ্র সাহা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আইনগত ভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। ১৯৮৯ সালে ওই ব্যক্তি মারা যান। এর পর তিনি ভোলানাথ কর নামে এক ব্যক্তিকে বিবাহ করেন। যিনি পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। ওই ব্যক্তিও ২০০৩ সালে কর্মরত অবস্থায় মারা যান। তার কিছু দিন পর চাকরির জন্য আবেদন করে ভোলানাথের সৎ ছেলে। কিন্তু ২০১১ সালে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানানো হয়, যেহেতু ভোলানাথ তাঁকে নিয়ম মেনে দত্তক নেননি তাই তিনি সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি তিনি পাবেন না।
পর্যবেক্ষণে আদালত বলে, পুত্র মানে শুধু জৈবিক বা দত্তক নেওয়া সন্তান নয়, সৎ ছেলে, অবৈধ সম্পর্কের পুত্র সন্তানও অন্তর্ভুক্ত। পুত্রের সংজ্ঞাকে সীমিত রাখলে তা সংবিধানের ১৬(২) ধারার লঙ্ঘন।
রাজ্য যুক্তি হিসাবে বলে হিন্দু দত্তক আইন অনুযায়ী ১৯৫৬ অনুযায়ী দত্তক নেওয়া পুত্রই একজন সরকারি কর্মীর পুত্র হিসাব গণ্য হবে। রাজ্যের এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।