বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। সেই সংক্রান্ত মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। দেশের শীর্ষ আদালত আগেই জানিয়েছিল রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি সুপ্রিম কোর্টই গঠন করে দেবে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং ইউজিসির তরফে ৫ জন করে নামের তালিকা সার্চ কমিটির জন্য জমা দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের তরফে আবেদনে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীকে সার্চ কমিটিতে রাখার আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে এই মামলায় যুক্ত আইনজীবীরা কমিটির জন্য রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম জমা দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চ। এর পাশাপাশি সার্চ কমিটিতে সুপ্রিম কোর্টের বাছাই করা কোনও ব্যক্তিকে রাখা যায় কিনা সেই ইঙ্গিত দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের গুঁতোয় তৈরি হল উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি, জানালেন রাজ্যপাল
এদিন রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রীকে সার্চ কমিটিতে রাখার আবেদন জানানো হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, ‘আমরা সিলেকশন কমিটি গঠন করতে চাইছি। ইলেকশন কমিটি নয়। আপনারা যদি নিজেরা একে অপরকে বিশ্বাস করতে না পারেন তাহলে সুপ্রিম কোর্টের উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থেই নিরপেক্ষ কাউকে রাখব।’
এদিন মামলায় রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা চেয়ে পাঠানোর পাশাপাশি সেখানে কোন কোন বিষয়ে পড়ানো হয়? কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হবে? সেই সংক্রান্ত তথ্য তাছাড়া কোন পদ্ধতিতে উপার্জনের করা হয় সেই সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী ৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই তালিকা বিবেচনা করে কমিটিদের সদস্যদের নাম সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত করবে বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে, দিন রাজ্যের কৌঁসুলি আদালতে অভিযোগ করেন, যে উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকার যে নতুন অর্ডিন্যান্স এনেছে সেই বিলে এখনও সই করেননি রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। পালটা আচার্যের আইনজীবী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসে চেয়েছেন। সেই কারণে তিনি স্বাক্ষর করেননি।’ এর পাশাপাশি তিনি কমিটিতে কারা থাকবেন সেই বিষয়ে আদালতকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান আইনজীবী। যদিও এ বিষয়ে ভিতরে ঢুকতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘রাজ্যপাল কী সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা ওনার ব্যাপার। কোথায় কীভাবে অর্ডিন্যান্স চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে সে বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আমরা ওই বিষয়ে ঢুকবো না সেটা হাইকোর্টে দেখুক।’ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত তথ্য আগামী শুনানির মধ্যে জমা করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।