যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। এই মুহূর্তে যাদবপুরে কোনও উপাচার্য নেই। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সুরঞ্জন দাস রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু তিনিও কয়েক সপ্তাহ আগেই পদত্যাগ করেছেন। ফলে এই মুহূর্তে অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছে রাজ্যের প্রথম শ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয়। সেই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় উপাচার্য না থাকাকেই দায়ী করেছেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। তাঁর মতে, উপাচার্য না থাকার ফলেই সমস্যা হয়েছে। উপাচার্য থাকলে কিছুটা সুবিধা হত এই ধরনের সমস্যা হত না।
আরও পড়ুন: আরও ৬ ছাত্রকে তলব করল যাদবপুর থানা, তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
যাদবপুরে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির ব্যর্থতা উঠে আসছে। এক্ষেত্রে স্নেহমঞ্জু বসু জানান, সমস্ত ক্ষেত্রে একজন রেজিস্ট্রারের ক্ষমতা থাকে না। তবে সেক্ষেত্রে উপাচার্যের ক্ষমতা থাকে। সুরঞ্জন দাস পদত্যাগ করেছিলেন গত ৩১ মে। এদিকে, অমিতাভ দত্তকে অস্থায়ী উপাচার্য করা হলেও তিনি গত ৪ অগস্ট ইস্তফা দিয়েছিলেন। উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব থাকে আচার্য তথা রাজ্যপালের উপর। কয়েকদিন আগে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ বিষয়ে আচার্যের দিকে দায় ঠেলে দিয়েছিলেন। রেজিস্ট্রারের মন্তব্যে ঠিক তেমনটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, ‘উপাচার্য থাকলে এভাবে সব দেয় আমাদের উপর আসে না।’ তাহলে কি আচার্যের দিকেই দায় ঠেলে দিতে চাইছেন রেজিস্ট্রার? সে প্রশ্ন উঠে আসছে।
উল্লেখ্য, যাদবপুরের ঘটনায় অভিযোগ ওঠে র্যাগিংয়ের। সেক্ষেত্রে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবকেই দায়ী করেছেন। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির ভূমিকা প্রসঙ্গে স্নেহমঞ্জু বসুর বক্তব্য, উপাচার্য থাকলে নিয়মিত এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু উপাচার্য না থাকলে তা নিয়ে সমস্যা হয়। প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ছাত্রের। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও কয়েকজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ছাত্রকে র্যাগিংয়ের ভিডিয়ো করা হয়েছিল। তবে সেইসব মুছে দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই যাদবপুরের মতো ঘটনার জন্য আচার্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে ব্যয় করেছেন ব্রাত্য বসু। প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। রাজ্যপাল বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। তারপরে সংঘাত চরমে ওঠে। যাদবপুরের ঘটনায় সেই সংঘাত আরও প্রকট হয়েছে।