অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ সংগ্রামী মঞ্চের, কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুপারভাইজার পদের নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই সময় ৩,৪০০ টি শূন্য পদ ছিল। তারমধ্যে সংরক্ষিত শূন্যপদ ছিল ৪০০টি। কিন্তু, ৪ বছর কেটে যাওয়ার পরেও এখনও সেই শূন্য পদে কোনও নিয়োগ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, অস্থায়ী কর্মীদের বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সাংবাদিক সম্মেলন। নিজস্ব ছবি।

নিয়োগ দুর্নীতিতে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আরও একটি দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। চুক্তি ভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগেও দুর্নীতি হয়েছে! এমনটাই অভিযোগ তুলল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তার ভিত্তিতে তিনি মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। 

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুপারভাইজার পদের নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই সময় ৩,৪০০ টি শূন্য পদ ছিল। তারমধ্যে সংরক্ষিত শূন্যপদ ছিল ৪০০টি। কিন্তু, ৪ বছর কেটে যাওয়ার পরেও এখনও সেই শূন্য পদে কোনও নিয়োগ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, অস্থায়ী কর্মীদের বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অভিযোগ, রাজ্যে মোট ১ লক্ষ ১৬ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রয়েছে। ২০১৯ সালে সিদ্ধান্ত হয়েছিল স্মার্টফোনের সাহায্যে কাজ করা হবে। সেই জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের স্মার্টফোন কেনার জন্য টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র সরকার। কিন্তু, এত বছর কেটে যাওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের স্মার্টফোন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাছাড়া, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মোবাইল না দেওয়া সত্ত্বেও জোর করে ভয় দেখিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়েই নিজের টাকাতেই তাঁদের ডিজিটালি কাজ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের প্রশ্ন, কেন্দ্রের বরাদ্দ হওয়া মোবাইল কেনার সেই টাকা কোথায় গেল?

 এর পাশাপাশি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি না করার অভিযোগ তুলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের দাবি, ২০১১ সালে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। সেই মতো এক মাস তাদের বৃদ্ধি প্রাপ্ত বেতন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরে সেই বাড়তি টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেতন বাড়িয়েও কেন তা বন্ধ করে দেওয়া হল? তাই নিয়ে প্রশ্ন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। এ নিয়ে তারা প্রতিনিয়ত আন্দোলন করছেন। তা সত্ত্বেও তাঁদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।  এই সমস্ত দাবি-দাওয়া নিয়ে আগামী ১ অক্টোবর থেকে ডিজিটালি কাজ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। তাঁদের দাবি, তাঁরা নিজের টাকা দিয়ে ফোনে বিল ভরে কোনও রকমের কাজ করবেন না। সরকারকেই মোবাইল রিচার্জের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

এদিন বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে ওয়েস্ট বেঙ্গল সরকারি কর্মচারীদের জন্য সার্ভিস অ্যাক্ট অনুযায়ী মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কমিটি যাতে তৈরি করা হয় সে বিষয়ে আর্জি জানিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। শুভেন্দু অধিকারী আশ্বাস দিয়েছেন তিনি মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলবেন।