আনন্দপুর কাণ্ডে পুলিশ তদন্তের যত গভীরে যাচ্ছে ততই খুলছে রহস্যের জট। এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন তরুণী। সেই ঘটনার তদন্তে এগোতেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল মোড়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কোনও ধর্ষণের ঘটনায় ঘটেনি। আসলে পুরোটাই সাজানো গল্প। অপহৃত যুবক শুভজিৎ মণ্ডলকে ফাঁসানোর জন্যই এইভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আর এই পুরো পরিকল্পনায় হল বিক্রম দাস নামে এক যুবকের। তার মস্তিষ্কপ্রসূত পরিকল্পনাতেই শুভজিৎকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের এই ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম হল বিক্রম দাস, অয়ন দাস এবং সুশান্ত মণ্ডল। এই তিনজনকেই হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে নেতাজিনগর থানার পুলিশ। তাদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক গাড়িতেই ছিল না, আনন্দপুরকাণ্ডে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব! ধৃত ১
গত সপ্তাহের সোমবার একটি গাড়িতে বেঁহুশ করে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু যে যুবকের বিরুদ্ধে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ জানছিলেন পালটা সেই যুবক অপহরণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এরপর তাদের মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে, ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পরে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। তারপর থেকেই ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে ধন্দে ছিলেন তদন্তকারীরা। সেই ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ প্রথমে শৌভিক দাস নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। ওই শৌভিকই শুভজিৎকে ফোন করে নেতাজিনগরের ফ্ল্যাটে ডেকেছিল। তারপর নেতাজিনগরের ফ্ল্যাটে আসতেই শৌভিক শুভজিৎ এবং তার গাড়ি চালককে আটকে রেখে মারধর করে এবং তার গাড়ি নিয়ে চলে যায়। ওই গাড়িতে শৌভিক, তরুণী এবং আরও এক যুবক অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করে। সেই ছবি ধরা পড়ে সিসিটিভিতে। পরে তরুণী অভিযোগ জানান, শুভজিৎ তাকে ধর্ষণ করে। অথচ সেই সময় শুভজিৎ গাড়িতে ছিল না।
তদন্তকারী জানতে পেরেছেন, ওই তরুণী হলেন শুভজিতের প্রাক্তন প্রেমিকা। শুভজিৎকে ফাঁসানোর জন্যই এই গল্প সাজানো হয়েছিল। শৌভিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ বিক্রমের নাম জানতে পারে। তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, বিক্রম দাসের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এরপর কলকাতায় এসে সেখানে তোলাবাজি শুরু করে। এরপরে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরে তার নাম জানতে পেরে পুলিশ।