ইডির পরিকল্পনা ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমানকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার। তবে মন্ত্রীর শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। কারণ আজকেই শেষ হচ্ছে বাকিবুরের ইডি হেফাজতের মেয়াদ। অপরদিকে মন্ত্রীর ইডি হেফাজতের মেয়াদ শুরু হবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে। তদন্তকারীদের মত ছিল, একান্ত জেরায় যে সব বিষয় বাকিবুর এবং জ্যোতিপ্রিয় অস্বীকার করে এসেছে, মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করলে হয়ত সেটা আর তাঁরা করতে পারবেন না। তবে আপাতত সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় ইডি অন্যদিকে তদন্তের মোড় ঘোরাচ্ছে। এই আবহে গতকালই জ্যোতিপ্রিয়র কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিককে তলব করেছিল ইডি। নথি নিয়ে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সেও গিয়েছিলেন। তবে তিনি নাকি নথি জমা দিতে পারেননি। এদিকে আজকে নথি হাতে ইডি দফতরে পৌঁছে যান জ্যোতিপ্রিয়র দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক। (আরও পড়ুন: 'আদানির বিরুদ্ধে কথা বলতে হিরানন্দানিকে টাকা দেব আমি', বিস্ফোরক মহুয়া)
এই দুর্নীতির পরিপ্রেক্ষিতে তল্লাশি অভিযান চলে ১১টি চাল কলে। সেখান থেকেই নাকি জানা গিয়েছে, একাধিক শেল কোম্পানির মাধ্যমে রেশনের টাকা নয়-ছয় হয়েছে। ইডির দাবি, সেই সব ভুয়ো সংস্থা নিজের স্ত্রী, পরিবারের সদস্য এবং বাকিবুরের মতো ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে চালাতেন জ্যোতিপ্রিয়। মোট ৯৫ কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। এই আবহে জ্যোতিপ্রিয়র পারিবারিক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। বালুর স্ত্রী এবং মেয়ের উপার্জনের ওপরও নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। এই আবহে আয়কর রিটার্নের নথি খতিয়ে ইডি জানতে পেরেছে, জ্যোতিপ্রিয়র মেয়ে প্রিয়দর্শিনী নাকি টিউশন পড়িয়ে ৩.৩৭ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার শাখায় রয়েছে প্রিয়দর্শিনীর অ্যাকাউন্ট। পেশায় প্রিয়দর্শিনী কলেজের সহকারী অধ্যাপক। এই আবহে তাঁর বার্ষিক আয় ২.৪৮ লাখ টাকা। তবে অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৩.৩৭ কোটি টাকা। ইডির জেরার মুখে পড়ে নাকি প্রিয়দর্শিনী জানান, তিনি এই টাকা টিউশন পড়িয়ে আয় করেছেন। এদিকে বালুর স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে আইডিবিআই-এর অ্যাকাউন্টে। সেখানে ৪.৩ কোটি টাকা রয়েছে।
এর আগে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। তিন বছর তিনি সচিবের দায়িত্ব সামলাবেন বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। জানা গিয়েছে, আশুতোষ কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে ছিলেন প্রিয়দর্শিনী।