লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এবার নজরে উঠে এল আদিবাসী সংগঠন। এবার নানা আদিবাসী সংগঠনগুলির সঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সভাঘরে হবে এই বৈঠক। কুর্মিদের প্রতিনিধি–সহ একাধিক সংগঠন থাকবে এই বৈঠকে। আধার কার্ড বাতিল–সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে এই বৈঠকে। জঙ্গলমহল সফরের আগেই আদিবাসী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করে নিতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সাঁওতাল, ভূমিজ, মুন্ডা, লোধা, কুড়মি –সহ নানা জনজাতি সংগঠনগুলির সামাজিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে প্রত্যেকটি সংগঠন থেকে দু’জনকে নবান্নে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এই আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রধান অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেছেন, ‘পুলিশ–প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার নবান্নে যেতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করবেন। কী বিষয়ে আলোচনা হবে জানা নেই। আমাদের সংগঠনের দু’জন প্রতিনিধি যাবেন।’ কুড়মিদের ‘দৌওদিয়াকে খৌওসিয়া’ কমিটির মুখপাত্র তথা কুড়মি সমাজের সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে নবান্নে যেতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ডেকেছেন। তাই যাব।’ আর কয়েকদিন পর জঙ্গলমহল সফর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অফিসারদের। তার আগে এই বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
অন্যদিকে এই বৈঠকের পর পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানের কোনও কাজ বাকি আছে কিনা এবং আদিবাসীদের কোনও প্রকল্পের প্রয়োজন আছে কিনা তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তাঁদের সমস্যার কথা শুনতে চান। আর সমাধান নিয়ে জঙ্গলমহল সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানের প্রশাসনিক সভা থেকে সেগুলি জানিয়ে দেওয়া হবে। এই সফরের বিষয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রসের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেছেন, ‘জঙ্গলমহলের প্রতিটি মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী সবার কথা শুনতে চান। তাই তিনি এখানে আসছেন। আর বৈঠক মানুষের স্বার্থেই।’
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় সাত দফায় ভোট’, দাবি সুকান্তর ‘হেরেও বিজেপির লজ্জা হয়নি’, পাল্টা শান্তনু
এছাড়া ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলের চার জেলার পাঁচটি আসন বিজেপি পেয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে কোনও কাজ করেনি বলেই অভিযোগ। তবে বিধানসভা, পুরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়যাত্রা অব্যাহত থেকেছে। এবার সেই সাফল্য লোকসভা নির্বাচনেও পেতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। আর এখানে কাজও করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। জঙ্গলমহলে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। তাঁর কনভয়ের পিছনে থাকা মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলা হয়েছিল। সেই অভিযোগে ১৫ জন কুড়মি নেতা–কর্মী গ্রেফতার হন। পরে অবশ্য সকলেই জামিন পান। এবার বৈঠকে কী হয় সেটাই দেখার।