বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশ ঘুষ খায়। পুলিশ টাকা তোলে। এবার কড়া ধমক দিয়ে পুলিশকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে তিনি এসব অভিযোগ শুনতে রাজি নন। তাঁর সরকারের ভাবমূর্তি কোনওভাবে কালিমালিপ্ত হোক সেটা তিনি মেনে নেবেন না। তাই ক্ষুব্ধ মুখ্য়মন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য আইডি কার্ড তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। অবৈধভাবে পুলিশের একাংশ টাকা নিলে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’কে ফোন করে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? বুধবার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে সরকারি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ‘বাংলার শাড়ি’ উদ্বোধনের কর্মসূচি ছিল। উপস্থিত ছিলেন ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তারা। সেই অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি চিফ সেক্রেটারি ও হোম সেক্রেটারিকে বলছি ক্ষুদ্র ব্যবসা যাঁরা করেন তাঁদের সকলকে একটি কার্ড তৈরি করে দিতে হবে। যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিলমোহর থাকবে। তাঁদের কাছ থেকে পুলিশ কোনও টাকা নিতে পারবে না। আর কেউ কোনও আলাদা ট্যাক্স নিতে পারবে না।’ সুতরাং পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে তিনি স্বীকার করলেন। আবার পথটাও আটকে দিলেন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? সূত্রের খবর, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এমন একটি অভিযোগ করা হয়েছিল। তার উপর ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তারা মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভ্যান্স সেলে এমন একটি অভিযোগ করেন। সেটা নিজেই দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন থেকেই তিনি রেগে ছিলেন। এত কষ্ট করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে যে সরকার সেই সরকারের পুলিশ (একাংশ) বদনাম করার মতো কাজ করছে! আর তার পরই সুযোগের সদ্ব্যবহার করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আগে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। তাঁর অভিযোগ ছিল, পুলিশের মদতেই যত্রতত্র রাস্তা দখল করে হকার বসে যায়। আর পুলিশ হকারদের থেকে মাসোহারা নেয়।
আরও পড়ুন: আবার মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ভেদ করে মঞ্চের সামনে যুবক, পাকড়াও করল পুলিশ
আর কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? তবে পুলিশের সবাই এই কাজে যুক্ত নন বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। কিন্তু যাঁরা এই কাজ করেন তাঁদের উপর তিনি ক্ষুব্ধ সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। আর তাতে পুলিশের সেইসব কর্মীরা বেশ চাপে পড়ে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই অবৈধভাবে টাকা তোলে না। এমন কাজ করে ১ শতাংশ। আর বদনাম হয় সবার। টাকা নিতে কে বলেছে? যদি দেখেন কেউ টাকা নিচ্ছে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে অভিযোগ করবেন।’ এই রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে তিনি আবার বুঝিয়ে দিলেন সরকার চলে স্বচ্ছভাবে। আর সেভাবেই চলবে। সেখানে কোনও অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না।