বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলের পর এবার পালা মন্ত্রিসভায় রদবলের। সূত্রের খবর দীপাবলির পরেই ঘোষিত হতে পারে নতুন মন্ত্রীদের নাম। আর তাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে জায়গা হতে পারে ৩ জনের। বিধানসভা নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভায় পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব বাড়িয়ে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে চায় বিজেপি।
লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির ১৮ জন প্রার্থী জয়লাভ করলেও মন্ত্রী হয়েছেন মাত্র ২ জন। কারণ হিসাবে দলের তরফে জানানো হয়েছিল, ১৮ জনরে মধ্যে ২ জন বাদে বাকি সবাই প্রথমবার সাংসদ। তাই তাদের দিল্লির রাজনীতি বুঝতে সময় দেওয়া প্রয়োজন। তাই বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরীকে মন্ত্রী করেছিল বিজেপি। মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন দিলীপ ঘোষ।
সরকার গঠনের প্রায় দেড় বছর পর সম্ভবত নভেম্বরে মন্ত্রিসভায় প্রথম রদবদল করতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। আর তাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আরও অন্তত ২ জন মন্ত্রীর অন্তর্ভুক্তি কার্যত সময়ের অপেক্ষা। কপাল ভাল থাকলে মন্ত্রী হতে পারে ৩ জন। কিন্তু কাদের কপালে ছিঁড়বে শিকে?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরে সাংগঠনিক কাঠামো স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্ভাব্য মন্ত্রীদের নাম অনুমান করা সহজ হয়ে গিয়েছে। যে সব সাংসদরা ইতিমধ্যে সংগঠনে জায়গা পেয়েছেন তাদের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, বিজেপি কড়া ভাবে এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি অনুসরণ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২১-এর ভোটে বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ভোটের ওপর নির্ভর করছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে আদিবাসী, তপশিলি ও রাজবংশী ভোট তাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাফল্যের পিছনে এই তিন সম্প্রদায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরবঙ্গে বিজেপিকে দুহাতে ভোট দিয়েছেন রাজবংশীরা। একই ভাবে ভোট দিয়েছেন জঙ্গলমহলের আদিবাসীরাও। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া তপশিলি অধ্যুষিত কেন্দ্র বনগাঁ ও রানাঘাট তপশিলি ভোটের ওপর ভর করেই জিতেছে বিজেপি।
সেক্ষেত্রে বনগাঁর সাংসদ, মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। রাজবংশীদের মন রাখতে মন্ত্রী হতে পারেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ অধিকারী। ওদিকে আদিবাসী কোটায় নাম রয়েছে অন্তত ৩ জনের। তার মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো। এছাড়া ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম ও আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলারও মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
বিজেপি সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকেই।