করোনা রোগীদের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে বাজি। এবার কালীপুজোয় বন্ধ করা হোক বাজি ফাটানো— চিকিৎসক সংগঠন, বিজ্ঞান মঞ্চর পাশাপাশি একই আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলাও। আর এই পরিস্থিতি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বাজি ব্যবসার সঙ্গে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত রাজ্যের ৩১ লক্ষ মানুষের কপালে। এই সমস্যার সমাধানসূত্র বের করতে আজ বৃহস্পতিবার, বাজি ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকে বসতে চলেছে রাজ্য সরকার। বাজি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অসংখ্য মানুষের স্বার্থে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
নবান্নে এই বৈঠকে রাজ্যের পক্ষে থাকবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে বাজি বিক্রির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন বাজি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা বাবলা রায়। দুপুর সাড়ে তিনটেয় তাঁকে নবান্ন থেকে ফোন করা হয়। মুখ্যসচিবের পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পুরো বিষয়টি নিয়ে সামনাসামনি আলোচনা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আজ, বৃহস্পতিবার বাবলা রায়কে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছেন।
কালীপুজো ও দীপাবলিতে বাজি ফাটানো নিয়ে কিছু আবেদন রাজ্য সরকারের কাছে রেখেছেন বাজি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, ১৪ ও ১৫ নভেম্বর অর্থাৎ শনি ও রবিবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অর্থাৎ দু’দিনে মোট ৪ ঘণ্টা বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিক রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বাজি ব্যবসায়ীরা। তাই দমকল, পরিবেশ–সহ মোট ৬টি সরকারি দফতর দ্বারা স্বীকৃত অর্থাৎ সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৫৩ হাজার ব্যবসায়ীকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ওই সংগঠন।
কিছু শর্ত রেখেছে রাজ্য সরকারও। জানানো হয়েছে, চাইনিজ বাজি বিক্রি করা যাবে না। সাপ বাজি, ইলেকট্রিক তার, রং মশালের মতো সে সব আতসবাজি থেকে বেশি ধোঁয়া তৈরি হয় তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছে রাজ্য। কম দূষণের বাজি বিক্রিতে রাজ্য সরকার সায় দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
করোনা রোগীদের মূল সমস্যা শ্বাসকষ্ট। কালীপুজোয় বাজি ফাটলে বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়বে। যার জেরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এই আশঙ্কায় বাজি বন্ধের দাবিতে সরকারকে চিঠি দিয়েছে রাজ্যের ৫ চিকিৎসক সংগঠন। একই দাবি পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চেরও। সেই সুরেই করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বাজি না ফাটিয়ে কালীপুজো উদ্যাপনের ডাক দিয়েছে রাজ্য সরকার।
ওদিকে, দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজোতেও বিধিনিষেধ আরোপ এবং কালীপুজো ও দীপাবলিতে সমস্ত রকমের বাজি নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। তা শুনানি হতে পারে, আজ বৃহস্পতিবার।