প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত নতুন কিছু নয়। ক্রমাগত একে অপরকে বিঁধেছে দুই সরকার, এবার বিধানসভায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে বাড়ি না পাওয়া রাজ্যবাসীর বঞ্চনা প্রসঙ্গে মতামত রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল তাঁর ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, কেন্দ্রীয় সরকার গৃহ নির্মাণে এক কানাকড়িও দেয়নি। ১১ লক্ষ ১ হাজার ৭৫৭টি বাড়ি নির্মাণের জন্য টাকা কেন্দ্র সরকার কেন অর্থ বরাদ্দ করছে না, সে বিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যাও হাজির করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলায় আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ না হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ স্পষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়।গতকাল বিধানসভায় সর্বসমক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আবাস যোজনায় বাড়ি চাই। এই কথা কেন্দ্রকে বার বার জানানো সত্বেও কাজ হয়নি। এত টিম পাঠানোর পরেও, এত রিপোর্টে দেবার পরেও, এত বার গিয়ে দেখা করার পরেও কেন কাজ হয়নি? আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরেও কেন কেন্দ্র টাকা দেয়নি? আমি শুনেছি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, রাজনৈতিক কারণে দেওয়া যাচ্ছে না।’
মুখ্যমন্ত্রী বিগত বছরগুলির পরিসংখ্যান ধরে ধরে বিদ্ধ করেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তিনি বলেন, ‘২০১০-১১ সালে আবাস যোজনার জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৭২ কোটি। ২০২৩-২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪২৩৩ কোটি টাকা।’ কেবলমাত্র আবাস যোজনা নয়, শিক্ষা ক্ষেত্রে ও সংখ্যালঘু উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অনীহা নিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘দেশের মধ্যে সংখ্যালঘু স্কলারশিপে আমরা এক নম্বর। সংখ্যালঘু এলাকা উন্নয়নে ৮৫৫ কোটি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করেছে। মৌলানা আজাদ স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা স্কলারশিপ দিচ্ছি। তাছাড়া মেধাশ্রী দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদেরও স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে। স্বনিযুক্তির জন্য মাইক্রো ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই নিয়োগ হবে। নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। উর্দু অ্যকাডেমির বাজেট বাড়ানো হয়েছে। ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের সাহায্য করা হয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপও পায় তারা।’
আবাস যোজনার ক্ষেত্রে সরাসরি টাকা আটকানোয় রাজনীতির অভিযোগ আনেন মমতা। পাশাপাশি সংখ্যালঘু উন্নয়নের টাকা নিয়েও অনেকে অপপ্রচার করছেন বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এই দিন জানিয়েছেন, রাজ্য ভিত্তিক উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি সমীক্ষা করবে খারিজি মাদ্রাসাগুলিকে কেন্দ্র করে। আগামী ছয় মাস ধরে এই সমীক্ষা চলার পরে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের উন্নয়নের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া। যার ফলে ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ পেতে সুবিধা হবে বলে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।