তিন সঙ্গীকে নিয়ে নৌকায় মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন শঙ্কর। পেশায় মৎসজীবী শঙ্কর এমন দুর্গম অঞ্চলে বহুবার মাছ ধরেছেন। বৃহস্পতিবার তাঁরা রওনা হওয়ার পর সোমবার আসে দুঃসংবাদ। জানা যায় সুন্দরবনের বেণীফেলির জঙ্গলের খাঁড়িতে মাছ ধরার সময় শঙ্করের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। শেষ রক্ষা করা যায়নি। মঙ্গলবার ২৯ বছরের শঙ্কর সর্দারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির দেউলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর সর্দার। সুন্দরবনে বাঘের হানায় আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যখন শঙ্করকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, ততক্ষণে সে গুরুতর আহত হয়েছিল। শঙ্করের ঘাড়ে কামড় বসায় বাঘ। সেভাবেই তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। এমনই দাবি শঙ্করের সঙ্গে থাকা বাকিদের। এরপর শঙ্করের সঙ্গীরা বৈঠা ও লাঠি নিয়ে বাঘের দিকে তেড়ে যেতেই আহত শঙ্করকে ফেলে বাঘ ঢুকে যায় জঙ্গলে। শঙ্করকে রক্তাক্ত অবস্থায় কুলতলি-জয়নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে এসএসকেএম-এও ভর্তি করা হয়। সোমবার সারা রাত শঙ্কর লড়ে যায় মৃত্যুর সঙ্গে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
শঙ্করের পরিবারে এখন পিতৃহারা তাঁর তিন সন্তান। অঝোরে কাঁদছেন তাঁর স্ত্রী। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন শঙ্কর। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত শঙ্করের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে মানাবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। ২০২২ সাল শুরু হতে একের পর এক বাঘের হানার ঘটনা উঠে এসেছে। শঙ্করের ঘটনা নিয়ে মোট ৪ জন শুধু ২০২২ সালেই বাঘের হানার শিকারে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছেন।