করোনার জেরে বেসরকারি স্কুল ছেড়ে এখন সরকারি স্কুলে ভর্তির হচ্ছে পড়ুয়ারা। সম্প্রতি অ্যানুয়াল স্টেটাস অফ এডুকেশন রিপোর্টে (ASER) এই তথ্য উঠে এসেছে।
ফোন ভিত্তিক ASER এর সমীক্ষাটি দেশের ২৬টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫২,২২৭ পরিবার ও পাঁচ থেকে ষোলো বছর বয়সী ৫৯,২৫১ শিশুর ওপর করা হয়। সেই সঙ্গে ৮৯৬৩টি সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের ওপর ও সমীক্ষা করা হয়।
২০১৮ সালের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে, সারা দেশ জুড়েই এবার বেসরকারি স্কুল থেকে সরকারি স্কুলে ভর্তির প্রবণতা সামান্য বেড়েছে। সমস্ত শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে এই ছবি দেখা গেছে।
আরও দেখা গেছে, বহু শিক্ষার্থী বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি হচ্ছে। ২০১৮ সালের ASER ও ২০২০ সালের ASER তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে , সরকারি স্কুলে ছাত্র ভর্তির সংখ্যা ৬২.৮% থেকে বেড়ে ৬৬.৪% হয়েছে। ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৭০% থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৩%।
সেই সঙ্গে দেখা গেছে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে বহু ক্ষুদে পড়ুয়া স্কুলে ভর্তি হচ্ছে না। মূলত ৬ ও ৭ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে একটি লক্ষ্য করা গেছে। সম্ভবত করোনার ভয় থেকেই তারা স্কুলে ভর্তি হচ্ছে না।
এই সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি কর্নাটকে। এখানে ১১.৩% ৬ থেকে ৫ বছরের শিশু ২০২০ সালে স্কুলে ভর্তি হয়নি। এর পরেই রয়েছে রাজস্থান। এখানে স্কুলে ভর্তি না হওয়া শিশুর সংখ্যা ১৪.৯%। আর তেলেঙ্গানায় এর পরিমাণ ১৪%।
স্কুলে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে একটা সামান্য অংশ তার পরিবারের প্রথম স্কুলে যাওয়া পড়ুয়া। প্রতি চার জন পড়ুয়ার মধ্যে তিন জন পড়ুয়ার বাবা বা মায়ের মধ্যে কোনও একজন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনো করেছেন। এক-চতুর্থাংশেরও বেশি বাবা মা উভয়ই নবম শ্রেণির পরও পড়াশোনা করেছেন। নথিভুক্ত শিশুদের মধ্যে, ৬০% এর বেশি পরিবারে কমপক্ষে একটি স্মার্টফোন আছে। স্কুলে নাম লেখানো শিশুদের মধ্যে গত দু বছরে এই সংখ্যাটা ৩৬.৫% থেকে বেড়ে ৬১.৮% হয়েছে।
মহারাষ্ট্র, গুজরাট, মধ্য প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং ত্রিপুরায় যে সমস্ত পরিবারের স্মার্টফোন রয়েছে তাদের শিশুদের অনুপাতের হার বৃদ্ধি পেয়েছে । ২০২০ সালের মার্চ মাসে স্কুল বন্ধ হওয়ার আগে বা পরে ৮০% এরও বেশি শিশুদের বর্তমান শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক রয়েছে। এই অনুপাত বেসরকারি স্কুলের তুলনায় (৭২.২%) সরকারি স্কুলে (৮৪.১%) ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি। রাজ্য জুড়ে, বাড়িতে পাঠ্যপুস্তক থাকা শিশুদের অনুপাত কেবল তিনটি রাজ্যে ৭০% এর নিচে নেমেছে। এই তিনটি রাজ্য হল, রাজস্থান (৬০.৪%), তেলঙ্গানা (৬৮.১%) এবং অন্ধ্র প্রদেশ (৩৪.৬%)।