ফয়েজ আহমদ ফয়েজ, আহমদ নদিম কাসেমির মতো সাহিত্যিক দিগগজদের দেশ পাকিস্তান। আর সেই পাকিস্তান এখন ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি প্রচুর শিশু স্কুলে না যাওয়া। দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ সশস্ত্র বাহিনীযুক্ত পাকিস্তান ২২.০২ মিলিয়ন থেকে ২৬.২১ মিলিয়নে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে স্কুল বহির্ভূত শিশুর সংখ্যা। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশন (PIE) এর একটি নতুন রিপোর্ট থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। শিক্ষা ব্যবস্থার এই দুরবস্থার হাল বোঝাতে রিপোর্টটির একটি টিজার প্রকাশ করা হয়েছে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনের (পিআইই) ২০২১-২২ সালের শিক্ষা পরিসংখ্যানের রিপোর্ট বলছে, স্কুল বহির্ভূত শিশুদের প্রাদুর্ভাব ভয়ঙ্কর। ২০২১-২২ সাল পর্যন্ত, পাকিস্তান জুড়ে ২৬.২ মিলিয়ন স্কুল-বহির্ভূত শিশু রয়েছে, যা বড় উদ্বেগের কারণ। উল্লেখযোগ্যভাবে, দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের মতে, স্কুলগামী বয়সের ৩৯ শতাংশ শিশু বর্তমানে স্কুলের বাইরে রয়েছে, যা সর্বজনীন শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদসংস্থা এএনআই-এর রিপোর্ট অনুসারে, বালুচিস্তান সবচেয়ে বেশি শতাংশের সাথে দাঁড়িয়েছে, যেখানে আশ্চর্যজনকভাবে ৬৫ শতাংশ শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে, যেখানে ইসলামাবাদ ক্যাপিটাল টেরিটরি সবচেয়ে কম শতাংশের রিপোর্ট করেছে। প্রধান প্রদেশগুলির মধ্যে তুলনায়, খাইবার পাখতুনখোয়া ৩০ শতাংশের স্কুল বহির্ভূত হার।
এছাড়াও ২০১৬-১৭ সালে ৪৪ শতাংশ থেকে ২০২১-২২ সালে ৩৯ শতাংশে স্কুল-বহির্ভূত শিশুদের শতাংশ কমে যাওয়া সত্ত্বেও, একই সময়ের মধ্যে সেই সংখ্যা ২২.০২ মিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৬.২১ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। এই বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে দায়ী করা হয়েছে। যা একভাবে স্কুল বহির্ভূত শিশুদের হ্রাসকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
কেন উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?
- গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা: ২৬.২১ মিলিয়ন শিশু স্কুলে না যাওয়া কোনো তুच्छ বিষয় নয়। এটি পাকিস্তানের শিশু জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে প্রভাবিত করছে।
- শিক্ষার অধিকার ক্ষুণ্ণ: প্রতি শিশুই শিক্ষার অধিকার রয়েছে। এই হিসাব অনুযায়, পাকিস্তানে প্রচুর শিশু তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
- দেশের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে: একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী কোনো দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। স্কুল বহির্ভূত শিশুর এই উচ্চ সংখ্যা ভবিষ্যতে দক্ষ, জ্ঞানী জনগোষ্ঠী গঠনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই সংকট সমাধানে কী করা যেতে পারে?
- সরকারি উদ্যোগ: সরকারকে শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে, স্কুলগুলো উন্নত করতে হবে এবং সকল শিশুর জন্য শিক্ষা অবশ্যম্বাবী করতে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
- সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: শিশুদের শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য এনজিও, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
- অভিভাবকদের উৎসাহিত করা: অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য উৎসাহিত করা জরুরি। এ জন্য আর্থিক সহায়তা, সচেতনতা কর্মসূচি ইত্যাদি কার্যক্রম চালু করা যেতে পারে।