ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য সরকার। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে আলোচনায় বসেছে স্কুলশিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি। ৩৭ সদস্য-বিশিষ্ট কমিটিতে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আছেন। তাঁরাই খতিয়ে দেখবেন যে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজন আছে কিনা। আগামী জুনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। যদি সিলেবাস পরিবর্তনের প্রয়োজন থাকে, তাহলে কী কী পরিবর্তন করা হবে, তা নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনায় বসবে সিলেবাস পরিবর্তন সংক্রান্ত কমিটি। শনিবার কমিটির চেয়ারম্যান উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘(ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) এখন যে সিলেবাস আছে, সেটায় কোনও পরিবর্তনের দরকার আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (বিশেষজ্ঞ কমিটির) রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’
এমনিতে ২০১২ সালে শেষবার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করেছিল রাজ্য সরকার। তারপর থেকে সেই পাঠ্যক্রম মেনেই সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পড়ানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে একই সিলেবাস থাকার পরে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণির সিলেবাস পালটানোর কোনও প্রয়োজন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। রাজ্য সরকারের স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, যদি ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়, তাহলে তা ২০২৫ সাল থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ ওই শিক্ষাবর্ষ থেকেই নয়া সিলেবাস মেনে ক্লাস শুরু করা হবে বলে রাজ্য সরকার সূত্রে খবর।
যদি সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়, তাহলে কেমন হতে পারে নয়া পাঠ্যক্রম? বিষয়টি নিয়ে সরকারিভাবে স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও সূত্রের খবর, সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিলেবাস পরিবর্তনের পথে হাঁটা হবে। বড় হয়ে ছাত্রছাত্রীরা যাতে সর্বভারতীয় স্তরের বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারে, তাদের যাতে সর্বভারতীয় স্তরে গিয়ে সমস্যায় পড়তে না হয়, সেটাও বিবেচনা করা হচ্ছে। যে কোনও বিষয়ে তাদের ভিত যাতে আরও শক্তি করা যায়, সেটার উপরও নয়া সিলেবাসে জোর দেওয়া হবে বলে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর।
অর্থাৎ এমনভাবে পাঠ্যক্রম তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা বাস্তবমুখী হয়ে উঠবে। শেষপর্যন্ত অবশ্য সিলেবাস পরিবর্তন হবে কিনা, তা পুরোটাই নির্ভর করছে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের উপর। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে স্কুলশিক্ষা দফতর। সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য বক্তব্য, ১২ বছর ধরে একই সিলেবাস রয়ে গিয়েছে। এবার তা পরিবর্তনের সময় এসে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে উচ্চমাধ্যমিক স্তরেও পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সর্বভারতীয় স্তরে যাতে বাংলার পড়ুয়ারা ভালো ফল করতে পারেন, সেটা মাথায় রেখেই সিলেবাস পরিবর্তনের উপর জোর দিচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
আরও পড়ুন: HS New Semester Syllabus: উচ্চমাধ্যমিকে এই বছরেই সেমেস্টার? নতুন সিলেবাসে প্রাথমিক অনুমোদন মিলল