ওটা কোচ-ক্যাপ্টেনের মাথাব্যাথা, আমার নয়। ওদের সমস্যা ওরাই বুঝবে। টিম ইন্ডিয়ার অন্দরমহলে তৈরি হওয়া নতুন অস্বস্তি নিয়ে কার্যত এভাবেই নিজের গা বাঁচালেন লোকেশ রাহুল। আসলে লিডারশিপ গ্রুপের সদস্য হলেও লোকেশ নিজেও জড়িয়ে রয়েছেন এই সংশয়ের মধ্যে। তাই বিশ্বকাপের আগে টিম ইন্ডিয়ার প্রথম একাদশের ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়ে মুখ খুলতে চাইলেন না রাহুল।
বিশ্বকাপের আগে ভারতের প্রথম একাদশের নিয়মিত সদস্যরা সকলেই ছন্দে রয়েছেন। রিজার্ভ বেঞ্চকে যাচাই করে নিতে গিয়েই সমস্যায় পড়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। কেননা যে, যেখানে, যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন, যথাযথ কাজে লাগিয়েছেন। রিজার্ভ তারকারাও এমনই চমকপ্রদ পারফর্ম্যান্স উপহার দিয়েছেন যে, বিশ্বকাপের জন্য যথাযথ প্রথম একাদশ নির্বাচন করতে গিয়ে কাকে বাদ দেবেন, সেটা ভেবেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে রাহুল দ্রাবিড়দের।
ওপেনে রোহিত-গিল ফর্মে রয়েছেন। ইশান কিষান সেখানে নিজের দাবি পেশ করে রেখেছেন। এমনকি বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডে না থাকা রুতুরাজ গায়কোয়াড়ও বড় রান করেছেন অজি সিরিজে।
তিন নম্বরে বিরাট কোহলির জায়গা নিয়ে সংশয় নেই। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি করেন শ্রেয়স।
ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বরে যথাযথ একজনের খোঁজে ছিল ভারত, সেখানে একসঙ্গে দাবি জানিয়ে রেখেছেন ৩-৪ জন। লোকেশ ধারাবাহিকভাবে রান করছেন। শ্রেয়স রানে ফিরেছেন। সূর্যকুমার পরপর হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন। ইশান মিডল অর্ডারেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
শুধু ব্যাটিং অর্ডারেই নয়, বরং বোলিং লাইনআপেও একই অবস্থায়। শামি নাকি সিরাজ, কাকে খেলানো উচিত, তা ভেবেই মাথার চুল ছিঁড়তে পারেন রোহিতরা। অশ্বিন যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একজোড়া ওয়ান ডে ম্যাচে, তাতে তাঁকে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ঢুকিয়ে দেওয়ার কথা ভাবতেই পারেন নির্বাচকরা।
সুতরাং, ভারতীয় দলে এই মুহূর্তে ক্রিকেটারদের নিজেদের মধ্যে জায়গা পাওয়া নিয়ে বিস্তর লড়াই, যেটা নিঃসন্দেহে ভালো লক্ষণ। এমন পরিস্থিতিতে কাকে ছেড়ে কাকে খেলানো হবে, এটা স্থির করাই চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে।
ইন্দোরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচের শেষে স্টপ-গ্যাপ ক্যাপ্টেন লোকেশ রাহুলকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি রোহিত ও দ্রাবিড়ের ঘাড়েই দায় চাপিয়ে দেন। রাহুল বলেন, ‘একজন ক্রিকেটার হিসেবে এটা আমার মাথাব্যাথা নয়। ক্যাপ্টেন রোহিত ফিরলে ও এবং কোচ দ্রাবিড় মিলে সিদ্ধান্ত নেবে।’
লোকেশ আরও বলেন, ‘এটা ঠিক যে ভালো খেলেও বসে থাকতে হলে খারাপ লাগে। তবে এটাই খেলার অঙ্গ। এটা হয়েই থাকে। সবাইকে একসঙ্গে খেলানো সম্ভব নয়। সবাই এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। যারাই সুযোগ পাক না কেন, নিজেদের ভূমিকা যথাযথ পালন করতে হবে। সুযোগ না পেলে আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হয়ে পরবর্তী সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’