প্রত্যেকবারের মতো এবারও আইপিএলে হট ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছে চেন্নাই সুপার কিংস। গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এবার শুরু করেছে চ্যাম্পিয়নের মতো করেই। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে গত ম্যাচে হার স্বীকার করতে হলেও ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের নজর কেড়েছে এবারের আইপিএলে সামির রিজভি, তুষার দেশপান্ডেদের পারফরমেন্স। এবার মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার নভজ্যোত সিং সিধু। কেন অন্য দলের বাতিল ক্রিকেটাররাই চেন্নাই সুপার কিংসে গিয়ে ফুল ফোটায় ফোটায় সেটাই বলে দিলেন সিধু।
সচরাচর চেন্নাই সুপার কিংসকে তারকা খচিত দল গড়তে দেখা যায় না। টিম ম্যানেজমেন্ট যাদেরকে পছন্দ করে দলে নেয় তাদেরকেই নিজের মতো করে তৈরি করে নেন সুপার কিংসের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। তার হাতে পরেই ফর্ম ফিরে পান শেন ওয়াটসন, অজিঙ্কা রাহানের মত ক্রিকেটাররা। সিএসকের হয়ে এবার দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছেন শিবম দুবে, তুষার দেশপান্ডেরা। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে নজর কেড়েছেন দীপক চাহার, রূতুরাজ গায়েকওয়াররা। ধোনির দলে নাম লেখানোর পরই নিজেদের অনেক উন্নতি করেছেন তরুণ এই ক্রিকেটাররা। তাদের এই উন্নতির পেছনে মহেন্দ্র সিং ধোনির ঠিক কতটা অবদান রয়েছে সেটাই বুঝিয়ে দিলেন সিধু।
উঠতি প্রতিভাদের নিয়ে বলতে গিয়ে প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান বলেন, 'প্রতিভা থাকলেই কিছু হয় না, যদি না সুযোগ মেলে। প্রতিভা এবং সুযোগ দুটি একসঙ্গেই দরকার লাগে। কোন ক্রিকেটারকে যদি দল সুযোগ দেয় এবং সেই ক্রিকেটার যদি সেই চ্যালেঞ্জ নিতে সক্ষম হয় তবেই তার পারফরমেন্সের উন্নতি ঘটে। যেমনটা হয়েছে সামির রিজভির ক্ষেত্রে"। মহেন্দ্র সিং ধোনি কয়েকদিন আগেই, সমীর রিজভিকে নিজের আগে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিলেন। এভাবে তরুণ ক্রিকেটার ওপর ভরসা দেখানোয় মাহির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সিধু। যেভাবে উঠতি প্রতিবাদের নিয়ে ভারতীয় দলের ভবিষ্যতের ফিনিশার তৈরি করছেন সিএসকের অধিনায়ক তা মুগ্ধ করেছে তাকে।
অবসর নেওয়ার পরেও জাতীয় দলে ধোনির কতটা অবদান রয়েছে এখনও, সেটা বোঝাতে গিয়েই সিধু বলেন,' কখন কোথায় কাকে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, সেটা বোঝাই সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এই বিষয়ে ধোনির ধারে কাছে কেউ নেই। মাহির পাশে জাদেজা থাকায় চেন্নাই দল অনেক বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে। দেশকে তিনটি আইসিসি ট্রফি দেওয়া ধোনির নতুন করে কিছু পাওয়ার নেই। তাই আগামী প্রজন্মের তারকাদের তুলে আনার কাজই এখন করে যাচ্ছেন । উঠতি প্রতিভাদের প্রমাণ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন সিএসকের অধিনায়ক"।
এমএসডির প্রশংসা করতে গিয়ে সিধু আরও বলেন, 'তিন বা চার নম্বরে ব্যাট করতে নামার থেকেও অনেক বেশি কঠিন শেষ দিকে ৬-৭ ওভার ব্যাট করতে আসা। সেই সময়ই একজন ক্রিকেটারের আসল পরীক্ষা হয়। স্লগ ওভারে কতটা রান তিনি করলেন। শেষ দিকে প্রত্যেক বলে দুরান বা আড়াই রান যোগ করার কাজটাই সবথেকে কঠিন। সেই কাজটাই প্রমাণ করে দেয় কে কত বড় ফিনিশার। আর মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ফিনিশার হওয়া মোটেই সহজ কাজ নয়"।
উল্লেখ্য বীরেন্দ্র সেহওয়াগ কয়েকদিন আগে মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রশংসা করেছিলেন। ফিল্ডিংয়ের সময় যেভাবে নিজের শরীর ছুঁড়ে দিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিয়েছিলেন মাহি, তা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন বিরু। ব্যাট হাতেও গত ম্যাচে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন ক্যাপ্টেন কুল, যা দেখে ৪২ বছরের মাহিকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলেই। নেটিজেনদের অনেকে আবার বলছেন বহু দেশেই তো ক্রিকেটাররা অবসর ভেঙে ফিরে আসেন। ১১ বছরের জ্বালা জুড়াতে তাই ধোনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা খেললে তাতে আর ক্ষতি কি, বরং ট্রফির খরাই তো কাটবে।