শুভব্রত মুখার্জি:- ওডিআই বিশ্বকাপের খারাপ পারফরম্যান্স এখন অতীত। ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে রেখে নতুন করে শুরুর লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ দল। আর সেই লক্ষ্যে তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জয় তুলে নিয়েছে। বুধবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিজেদের ঐতিহাসিক টি-২০ ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। দুরন্ত ব্যাট করেছেন লিটন কুমার দাস। ক্রিজে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। তাঁর অপরাজিত ইনিংস কিউয়িভূমে টাইগারদের প্রথম টি-২০ ম্যাচ জয়ের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছে। উল্লেখ্য গত বছর জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিছে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল টাইগাররা। আর চলতি সফরে প্রথমে ওয়ানডেতে ঐতিহাসিক জয় পাওয়ার পরে এবার টি-২০'তে ও এসেছে স্বস্তির ঐতিহাসিক জয়। কোথাও যেন বিশ্বকাপের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছেন টাইগাররা। ফলে দিন শেষে নিউজিল্যান্ডে তিন সংস্করণেই জয়ের দেখা পেয়ে গেল বাংলাদেশ।
এ দিন বল হাতে বাংলাদেশের সিমাররা দুরন্ত বোলিং করেছেন। যার উপর দাঁড়িয়ে নেপিয়ারে বাংলাদেশ ব্যাটাররা দলকে পাঁচ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় এনে দিয়েছে। চলতি সফরে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে স্মরণীয় এক জয় পেয়েছিল টাইগার বাহিনী । আর এবার টি-২০ সিরিজের শুরুতেও ধরা দিল সাফল্য। নিউজিল্যান্ডে প্রথমবার টি-২০ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম টি-২০'তে নেপিয়ারে বুধবার নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ। উল্লেখ্য নিউজিল্যান্ডে এর আগে ১১টি টি-২০ খেলে বাংলাদেশ সবকটিতেই হেরেছিল। এর মধ্যে ৯টি ম্যাচ ছিল কিউয়িদের বিপক্ষে। ঘটনাচক্রে গত শনিবার এই মাঠেই নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটাতে প্রথমবার ওয়ানডেতে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। সে দিন নিউজিল্যান্ড দলকে ৯৮ রানেই অলআউট করেছিল বাংলাদেশ বোলাররা। সেই একই উইকেটে টি-২০'তেও টাইগার বোলাররা অসাধারণ খেললেন। এদিন ম্যাচে একটা সময়ে নিউজিল্যান্ড দল ১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়েছিল!
এদিন কিউয়িদের টেনে তোলেন জিমি নিশাম। ২৯ বলে ৪৮ রানের একটি দুরন্ত ইনিংস খেলেন তিনি।নিশামের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৩৪ রান করে নিউজিল্যান্ড দল। এছাড়াও মিচেল স্যান্টনার ২৩ এবং অ্যাডাম মিলনে ১৬ রান করেছেন। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন সরিফুল ইসলাম।দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ এবং মুস্তাফিজুর রহমান।
রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে একপ্রান্ত আগলে রাখেন লিটন। ৩৬ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার লিটন কুমার দাস।শেষ দিকে লিটনের সঙ্গে জুটিতে গড়ে টাইগারদের হয়ে জয় ছিনিয়ে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ম্যাচ শেষে তিনি অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ১৯ রান করে। তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কারণে তিনি ম্যাচের সেরা হয়েছেন।ম্যাকলিন পার্কের উইকেট এদিন একটু মন্থর ছিল।তবে দুই দলের ব্যাটাররা সেখানে সেইভাবে সুবিধা নিতে পারেননি। বাংলাদেশের হয়ে এছাড়াও সৌম্য সরকার ২২, অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয় ১৯ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়। লিটন দাসের হার-না-মানা ৪২ রানের ইনিংসেই নেপিয়ারে ইতিহাস লিখল বাংলাদেশ। এই ইনিংস খেলার পথে লিটন পিছনে ফেললেন তামিম ইকবালকে। তামিমকে টপকে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রান সংগ্রাহকদের তালিকায় লিটন এখন তিনে। আর তাতেই এক ধাপ নেমে গেল তামিমের অবস্থান।
নিশাম জানিয়েছেন ‘আজকের ম্যাচে আমাদের উইকেট পড়ার সময়টা ভালো ছিল না। বিশেষ করে যখনই মোমেন্টাম পাচ্ছিলাম আমরা তখনই উইকেট পড়েছে। আমি নিজেও বাজে সময়ে আউট হয়েছি। এই হার হজম করাটা কঠিন।তবে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দিতেই হবে। তারা ম্যাচের শুরু থেকেই খুবই জয়ের বিষয়ে প্যাশনেট ছিল। কিছু মোমেন্টামও পেয়েছে তারা। আমাদের জন্য এটা আরেকটা দিন। এদিন আরও ১৫-২০ রান বেশি করতে পারলে ম্যাচের চিত্রটা অন্যরকম হতে পারত। তবে বাংলাদেশ ভালো খেলেছে। জয়টা ওদের প্রাপ্য।’