চলছে লোকসভা নির্বাচনয। চারিদিকে তাই শুধু ভোট নিয়েই চর্চা চলছে। সেই আলোচনা প্রবেশ করেছে টলিপাড়ার অন্দরেও। কারণ বহু তারকা অভিনেতা, পরিচালকই এখন রাজনীতির সঙ্গে জুড়েছেন। এদিকে এতকিছুর মাঝেও রাজনীতি থেকে দূরেই যাঁরা থাকতে পছন্দ করেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন পরিচালক, প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আপাতত তিনি নিজের ছবি বহুরূপী নিয়ে ব্যস্ত, তাই আদপে তিনি ভোটটা দিতে পারবেন কিনা, সেটাও জানা নেই তাঁর। কারণ কলকাতায় যখন ভোট, তখন তিনি থাকছেন রাজ্যের বাইরে।
সম্প্রতি রাজনীতি ও রাজনীতির প্রতি আগ্রহ সহ নানান বিষয় নিয়ে আনন্দবাজারের ‘ভোটের দিব্যি’তে নিজেই লম্বা একটা লেখা লিখেছেন শিবপ্রসাদ। পরিচালক লিখেছেন তাঁর বাবা সক্রিয় রাজনীতির যুক্ত ছিলেন। তাই তিনি ছোটথেকেই নিজের বাড়িতে রাজনীতি নিয়ে নানান আলোচনা শুনেছেন। তবে শিবপ্রসাদের কথায়, তাঁর কখনও রাজনীতি নিয়ে কোনও আগ্রহ ছিল না। এমনকি তিনি যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে পড়াশোনা করতেন, তখনও তিনি কখনও ছাত্র রাজনীতি করেননি বলে জানিয়েছেন পরিচালক, বদলে তাঁকে আকর্ষণ করেছে নাটক, শিল্পকলা। তাই সেসময়টাতে চুটিয়ে নাটক করেছেন শিবপ্রসাদ।
তবে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘নাটকের অবশ্য নিজস্ব রাজনীতি আছে, সিনেমারও তাই। সেদিক থেকে বলব, আমার উইনডোজের প্রতিটি ছবির ভাষাই আসলে আমার রাজনীতির ভাষা।’
শিবপ্রসাদ জানাচ্ছেন, তাঁকেও আর অনেকের মতোই এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় যে তিনি কেন রাজনীতিতে আসেননি? এক্ষেত্রে শিবপ্রসাদের সাফ কথা, আসলে ভালোবাসা না থাকলে কোনও কাজ হয় না। তাঁর কথায়, রাজনীতি আর রাজনৈতিক সচেতনতা এক নয়। এই দুটো বিষয়ের অনেক পার্থক্য। এক শিল্পী তাঁর কাজ দিয়েই সমাজ ও ব্যক্তিগত রাজনৈতিক দর্শনকে তুলে ধরেন। আর তাই তাঁর 'হামি', ‘গোত্র’, ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি’ ‘লক্ষ্মীছেলে’ সহ বহু ছবিতেই তিনি তাঁর নানান বিষয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেছেন।
শিব্রপ্রসাদ আরও লিখেছেন, বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক পরিমণ্ডল নিয়ে কথা ওঠে। এখন সবকিছুতেই মেরুকরণ। সবকিছুই যেন বড় উগ্র। পরিচালকের কথায়, তাঁকে কখনও এমন প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হয়েছে যে দেশে যেভাবে রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা তৈরি হয়েছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে কি আমরা আমাদের মনের কথা বলতে পারব? যেধরনের ছবি এতদিন তৈরি করেছি, সেগুলি কি তৈরি করতে পারব?
শিবপ্রসাদের কথায়, তিনি পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক হিসাবে গর্বিত। এতদিন তিনি যে ছবি তৈরি করতে চেয়েছেন পেরেছেন। শিল্পী হিসাবে এখনও সেভাবে বাধার সম্মুখীন হননি। তাই এখানকার রাজনীতিকদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন পরিচালক শিব্রপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
সব শেষে জানিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে কখনওই আসতে চাননা। তাঁর কথায়, ‘পাকচক্রে কোনওদিন জনপ্রিতিনিধি হয়ে গেলেও আমি জানি আমার মা আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবেন। স্ত্রীও তাই করবেন। নন্দিতাদি হয়ত আমাকে প্রযোজনা সংস্থা থেকেই বের করে দেবেন।’