টি-২০ ক্রিকেটে ঘাড়ের উপর ২৬৬ রানের বোঝা নিয়ে ব্যাট করতে নামলে যে কোনও দলের চাপে পড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। এমন বিরাট টার্গেট তাড়া করতে হলে শুরু থেকে ব্যাট চালানো ছাড়া উপায় নেই। শনিবার এমন পরিস্থিতিতে উইকেটের মায়া ত্যাগ করে ধুমধাড়াক্কা ব্যাট ঘুরিয়েও অসাধ্যসাধন করা সম্ভব হয়নি দিল্লি ক্যাপিটালসের পক্ষে।
কোটলায় টস-ভাগ্য সঙ্গ দেয় দিল্লি ক্যাপিটালসকে। তবে ক্যাপ্টেন ঋষভ পন্ত ব্যাটিং পিচে শুরুতে স্কোরবোর্ডে রান তোলার কথা ভাবেননি। বরং তিনি রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেন। শেষমেশ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ শুরুতে ব্যাট করে বিরাট রানের ইনিংস গড়ে তোলায় নাগাল পাওয়া সম্ভব হয়নি দিল্লির পক্ষে। দিল্লিকে থামতে হয় জয় থেকে ৬৭ রান দূরে।
ম্যাচের শেষে সঙ্গত কারণেই হারের কারণ দর্শাতে হয় দিল্লি দলনায়ক ঋষভ পন্তকে। তিনি যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন কোথায় ভুল হয়েছে। তবে নিজের ধীর ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ায় নেটেজেনদের একাংশের বিদ্রুপ হজম করতে হচ্ছে ঋষভকে।
প্রথমত, এমন পিচে টস জিতে কেন ব্যাটিং করেনি দিল্লি, তার কারণ জানাতে গিয়ে পন্ত দাবি করেন যে, তাঁরা ভেবেছিলেন শেষের দিকে শিশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে শিশির না পড়ায় তাঁদের পরিকল্পনা বুমেরাং হয় বলে মেনে নেন ঋষভ। তিনি বলেন, ‘শিশিরের ভাবনা মাথায় ছিল বলেই টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে শেষমেশ শিশির পড়েনি। তার পরেও আমাদের সুযোগ থাকত, যদি ওদের ২২০-২৩০ রানের মধ্যে আটকে রাখতে পারতাম।’
আরও পড়ুন:- IPL 2024: ইডেনে RCB-র বিরুদ্ধে কাদের মাঠে নামাবে KKR? দেখুন সম্ভাব্য একাদশ
পন্ত স্বীকার করে নেন যে, পাওয়ার প্লে-তে সানরাইজার্সের ব্যাটিংই ম্যাচের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেয়। তাঁর কথায়, ‘পাওয়ার প্লেটাই তফাৎ গড়ে দিয়ে যায়। ওরা যথেচ্ছ (১২৫) রান তোলে। বাকি সময়টা আমরা শুধু পিছনে দৌড়েছি। যতটা ভেবেছিলাম, দ্বিতীয় ইনিংসে তার থেকে বেশি বল থমকেছে। তবে ২৬০-২৭০ রান তাড়া করতে হলে ব্যাট চালানো ছাড়া আপনার উপায় নেই।’
আরও পড়ুন:- IPL-এ তৃতীয় দ্রুততম অর্ধশতরান ম্যাকগার্কের, সব থেকে কম বলে ৫০ করেছেন কারা?
উল্লেখ্য, রান তাড়া করতে নেমে দিল্লিও ইনিংসের শুরুটা করে যথাযথভাবে। প্রথম ওভারের প্রথম ৪টি বলে পরপর চারটি চার মেরে পঞ্চম বলে আউট হন পৃথ্বী শ। জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক ও অভিষেক পোড়েল পাওয়ার প্লে-তে ঝড় তোলেন। ম্যাকগার্ক মাত্র ১৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তবে জ্যাক ব্যক্তিগত ৬৫ রানে ও অভিষেক ৪২ রানে আউট হওয়ার পরেই ম্যাচে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকে দিল্লি ক্যাপিটালস।
ঋষভ পন্ত ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্য ৪৪ রান করলেও খরচ করেন ৩৫টি বল। এমন বড় রান তাড়া করতে হলে পন্তের কাছ থেকে যে রকম ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং প্রত্যাশিত, সমর্থকদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি তিনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নেটিজেনদের অনেকে মনে করছেন যে, ফ্রেজাররা আউট হওয়ার পরে পন্তের বিস্ফোরক রূপ ধারণ করতে না পারাই দিল্লির হারের অন্যতম কারণ।
ম্যাচের শেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনও বলা-কওয়া শুরু হয়ে যায় যে, বিশ্বকাপের আগে নিজের ব্যাটিং গড় ভালো করার জন্য ধীরে-সুস্থে ব্যাট করেছেন পন্ত। দলের জন্য বাড়তি দায়িত্ব নিতে চাননি তিনি। এমনকি দলের দরকারের সময়ে পন্তের ৬ নম্বরে ব্যাট করতে আসাও পছন্দ হয়নি অনেকের।