দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিয়নের বক্সিং ডে টেস্টে পরাজিত হওয়ার পরে রোহিত শর্মা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা পিচ ও পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে যথাযথ মানিয়ে নিতে পারেননি। ভারতের খারাপ ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স দেখে সুনীল গাভাসকরের মতো বিশেষজ্ঞ ক্ষোভ উগরে দেন এই দাবি করে যে, ইন্টার স্কোয়াড প্র্যাক্টিস ম্যাচ না খেলে ভারতীয় দলের উচিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও দলের সঙ্গে যথাযথ প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামা।
গাভাসকরের মত, পিচের বাউন্স ও পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্র্যাক্টিস ম্যাচের জুড়ি নেই। তিনি ইন্টার স্কোয়াড প্রস্ততি ম্যাচকে প্রহসন বলে উল্লেখ করেন। সানি স্পষ্ট জানান যে, ইন্টার স্কোয়াড প্র্যাক্টিস ম্যাচে নিজের দলের বোলাররা কখনই ব্যাটারদের যথাযথ পরীক্ষা নিতে চাইবেন না। এমনকি চোট পেতে পারেন এই আশঙ্কাতেই ব্যাটারদের জোরালো বাউন্সারের মুখেও ফেলতে ভয় পাবেন নিজেদের বোলাররা। অন্য দলের বোলাররা সেক্ষেত্রে নিজেদের সেরাটা দিয়ে ভারতীয় ব্যাটারদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইবেন। তাই সেটাই টেস্টের আগে যথাযথ ম্যাচ প্র্যাক্টিস হতে পারে রোহিতদের।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে কেন ভারতীয় দল ইন্টার স্কোয়াড প্র্যাক্টিস ম্যাচেই ভারসা রাখে, কেন টিম ইন্ডিয়া কোনও প্রোটিয়া দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামেনি, তার কারণ জানালেন ক্যাপ্টেন রোহিত। তাঁর দাবি, প্রস্তুতি ম্যাচে যে ধরণের পিচে খেলতে দেওয়া হয়, তার প্রকৃতি টেস্টের পিচের থেকে সর্বদা আলাদা হয়। তাছাড়া প্রতিপক্ষ দলে যে মানের বোলার থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলে টেস্টে মাঠে নামার কোনও সুফল পাওয়া যায় না।
অর্থাৎ রোহিতের দাবি, প্র্যাক্টিস ম্যাচে লো বাউন্সের পিচ দেওয়া হয় এবং ১২০-১২৫ কিলোমিটারে বল করা বোলারদের বিরুদ্ধে খেলতে দেওয়া হয় বেশিরভাগ সময়ে। অন্যদিকে ইন্টার স্কোয়াড প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেললে নিজেদের পছন্দ মতো পিচ বানাতে বলা যায়। তাছাড়া নিজেদের দলের চ্যালেঞ্জিং বোলারদের মোকাবিলা করারও সুযোগ পাওয়া যায়।
সাংবাদিক সম্মেলনে রোহিত শর্মা বলেন, ‘গত ৪-৫ বছরে আমরা বিদেশ সফরে টেস্ট সিরিজের আগে প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলে আসছি। আমারা চেষ্টা করি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলার। তবে টেস্টে যে ধরণের পিচে খেলা হয়, প্র্যাক্টিস ম্যাচে তেমন পিচ পাওয়া যায় না। তার থেকে ভালো নিজেদের চাহিদা মতো পিচ তৈরি করে অনুশীলন করা। নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেললে পিচের গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ থাকে।’
হিটম্যান আরও বলেন, ‘গতবার যখন আমরা অস্ট্রেলিয়ায় যাই, যখন আমরা ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাই, প্র্যাক্টিসে বল হাঁটুর উপরে ওঠেইনি। তবে টেস্টে দেখুন, বল মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। সুতরাং, অনেকগুলি দিক বিবেচনার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নিজেদের মতো অনুশীলন করার।’
শেষে ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘যদি প্র্যাক্টিস ম্যাচে টেস্টের মতো একই ধরণের পিচ ও পরিবেশ পাওয়া যায়, তাহলে ঠিক আছে। তবে প্র্যাক্টিস ম্যাচে এমন পেসারদের বিরুদ্ধে খেলতে দেওয়া হয়, যাদের গতি ১২০-১২৫ কিলোমিটার। গত ২-৩টি প্র্যাক্টিস ম্যাচে আমাদের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার থকে ভালো নিজেদের মতো পিচ বানিয়ে নিজেদের বোলারদের মোকাবিলা করা।’