ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ জেতার প্রতিশ্রুতি দিয়েও, শেষ পর্যন্ত খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে গোটা পাকিস্তান শিবিরকে। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলেও পরের দিকে লাগাতার হারে কার্যত চাপে পড়ে যায় বাবর আজমের দল। চাপের ব্যাপার হয়ে যায় যখন অনভিজ্ঞ দলের কাছে হারা থেকে শুরু করে জেতা ম্যাচ হারতে শুরু করে পাকিস্তান। টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে পরাজয়ের পর, প্রাক্তন পাক তারকাদের থেকে চরম কটাক্ষের শিকার হতে হয় গোটা দলকে। এমনকী গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও বাজেভাবে পরাজিত হয় পাকিস্তান ইংল্যান্ডের হাতে। তবে এই শোচনীয় আবহাওয়ায়, একটি তালিকা প্রকাশ করেন প্রাক্তন পাক তারকা রশিদ লতিফ। নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে ওই তালিকা প্রকাশ করেন তিনি। তাতে দেওয়া পাকিস্তানের অধিনায়ক এবং তাঁদের বরখাস্ত বা পদত্যাগের সাল।
জানা গিয়েছে, বুধবার নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে এই তালিকা প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন পাক তারকা। তালিকায় রয়েছে শেষ ছয় বিশ্বকাপের পাক অধিনায়ক এবং তাদের বরখাস্ত বা পদত্যাগের সাল। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান। দলের এই খারাপ ফলাফলের পরই দেশে ফিরে গিয়ে পাকিস্তান দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বাবর আজম। পরিস্থিতি যে বেশ জটিলের পথে এগোচ্ছে, তা তিনি বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারেন। ঠিক সেই জন্যই আগে ভাগে নিজের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের ফল খুব একটা ভালো ছিল না। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়ে হয় তাদেরকে। দেশে ফেরার পরই অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সরফরাজ আহমেদকে। এখানেই শেষ নয়, ২০১৫ বিশ্বকাপে অবশ্য পাকিস্তান কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় তারা। তারপরই অধিনায়কের পদ থেকে সরে যান মিসবা উল হককে। ২০১১ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পাকিস্তান উঠলেও ভারতের বিরুদ্ধে হার। সেবার অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শাহিদ আফ্রিদিকে। পাশাপাশি ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পরই ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নেন ইনজামাম উল হক। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারত বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলেও পাকিস্তান সুপার সিক্সে জায়গা করতে পারেনি। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতেই তারকা পেসার ওয়াকার ইউনিসকে বরখাস্ত করা হয়।
এক নজরে বরখাস্ত বা পদত্যাগ করা অধিনায়কদের তালিকা:-
২০০৩ - বরখাস্ত করা হয়েছিল তারকা পেসার ওয়াকার ইউনিসকে
২০০৭ - বিশ্বকাপের পর অবসর নিয়ে নিয়েছিলেন তারকা ব্যাটার ইনজামাম উল হক
২০১১ - বরখাস্ত করা হয়েছিল তারকা ব্যাটার শাহিদ আফ্রিদিকে
২০১৫ - পদত্যাগ করেছিলেন মিসবা উল হক
২০১৯ - বরখাস্ত করা হয়েছিল সরফরাজ আহমেদকে
২০২৩ - পদত্যাগ করেন বাবর আজম
প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপে পাকিস্তানের খারাপ পারফরম্যান্স এবং খালি হাতে দেশ ফিরে আসার পর অধিনায়ক পদ থেকে ইস্তাফা দেন তারকা ব্যাটার বাবর আজম। তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই খবর দেশবাসীকে জানান। প্রাক্তন পাক অধিনায়কের বক্তব্য, তিনি তিনটি ফরম্যাট থেকেই অধিনায়ক হিসেবে পদত্যাগ করলেন। তবে দেশের হয়ে খেলবেন সবকটিই। এছাড়াও তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁর কাছে খুব কঠিন হলেও, এটাই সঠিক সময় ছিল এবং তিনি আগের মতোই নিজের সমস্ত অভিজ্ঞতা দলে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন এবং নতুন অধিনায়ককে সবরকমভাবে সাহায্য করবেন। তবে বাবরের এই পদত্যাগ পাকিস্তান দলের কাছে একটা বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন ক্রিকেট মহল সহ পাকিস্তান ক্রিকেট সমর্থকরা। এবার দেখার বিষয় হলো যে কে হতে চলেছে পাকিস্তানের নতুন অধিনায়ক।