শুভব্রত মুখার্জি- কোন দেশের ক্রীড়া সংস্থায় সেই দেশের ক্রীড়ামন্ত্রক হস্তক্ষেপ করলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের উপর নিষেধাজ্ঞার খাড়া নেমে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। যে কোন ক্রীড়ার ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটতে পারে। এই ঘটনায় ফিফা অত্যন্ত কড়া। তাদের অধীনে থাকা কোন দেশের অ্যাসোসিয়েশনে সেই দেশের সরকার হস্তক্ষেপ করলে সঙ্গে সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দেয় তারা। এবার একেবারে ফিফার ঢঙেই কাজ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। ওডিআই বিশ্বকাপ চলাকালীন তাদের পূর্ণ সদস্য দেশ শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডে সেই দেশের সরকার হস্তক্ষেপ করাতে আইসিসি তাদেরকে নিষিদ্ধ করার মতন কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত নিতে নাকি আইসিসিকে বলেছিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডই! এমনটাই উঠে এসেছে এক রিপোর্টে।
শুক্রবার আইসিসির তরফে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে নিষিদ্ধ করা হয়। দেশের সরকারের তরফে বোর্ডের কার্যকলাপে খুব বেশি হস্তক্ষেপের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আইসিসির তরফে। শ্রীলঙ্কা সরকারের তরফে বোর্ডকে ভেঙে দেওয়া হলেও বোর্ডের সভাপতি শাম্মি সিলভাকে এখনও নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে মান্যতা দিচ্ছে আইসিসি। তবে বোর্ড সূত্রে খবর, আইসিসির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল জানাতে চলেছে শ্রীলঙ্কার বোর্ড। এখন আইসিসি কী সিদ্ধান্ত নেয় তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।
আইসিসি শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিত করার পর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানা সিংহে। উল্লেখ্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডে (এসএলসি) রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। যা একেবারেই মেনে নেয়নি আইসিসি। এসএলসিতে দুর্নীতির অভিযোগ এবং সে জন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ নিয়ে কিছুদিন ধরেই শ্রীলঙ্কায় বিতর্ক তুঙ্গে।
সদস্যপদ স্থগিতের আগের দিন বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচটি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেছে শ্রীলঙ্কা। ৯ ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে কুশল মেন্ডিসের দল। বিশ্বকাপে জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্সও ক্রিকেট বোর্ডের ওপর শাস্তির পরে এই বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী।
আইসিসির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক হয়নি। যখন আইসিসি কিংবা অন্য কোনও সংস্থা নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন দীর্ঘ একটা প্রক্রিয়া মানা হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বিস্ময়কর এবং সেটা নৈতিকতা বিরোধীও। তারা আমাদের দেশকে এভাবে কীভাবে অভিযুক্ত করতে পারে।’ অনির্দিষ্টকালের এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আগামী জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। এসএলসির বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ শ্রীলঙ্কা থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে ভেন্যু প্রস্তুত করা বাবদ আইসিসির কাছ থেকে ২৪ লাখ ডলার বরাদ্দ হারাবে এসএলসি। নিঃসন্দেহে এই রকম কোন ঘটনা ঘটুক তা চাননি কোনপক্ষই।