‘আলোর’ শহরে কাদের ভাগ্য উজ্জ্বল হবে? কার জন্য ‘জলভরা সন্দেশ’ রেখে দিয়েছেন আমজনতা? তা ইভিএমে বন্দি হবে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি)। শিলিগুড়ি, বিধাননগর এবং আসানসোলের সঙ্গে আগামিকাল চন্দননগর পুরনিগমেও নির্বাচন হতে চলেছে।
একনজরে চন্দননগর পুরনিগম
১৯৪৯ সালে স্বাধীন ভারতে যুক্ত হয় চন্দননগর। ছয় বছর পরেই পুরসভার তকমা পেয়েছিল। ১৯৯০ সালে তা পুরনিগমে পরিণত হয়। ঐতিহাসিকভাবে অধিকাংশ সময় বামেদের দখলে ছিল চন্দননগর। ১৯৯৬ সালে বোর্ড গঠন করেছিল কংগ্রেস। তারপর ফের চন্দননগর পুরনিগমে উড়েছিল লাল আবির। রাজ্যে পালাবদলের আগে ২০১০ সালের পুরনির্বাচনে চন্দননগরে জয়লাভ করেছিল তৃণণূল কংগ্রেস। ২০১৫ সালেও ক্ষমতা ধরে রেখেছিল ঘাসফুল শিবির। তবে পরবর্তীতে গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত হয় তৃণমূল।
আপাতত চন্দননগর পুরনিগমে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ৩৩ টি। তবে শনিবার ৩২ টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনের আগেই ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী গোকুল পালের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে আপাতত ভোট হচ্ছে না। ৩২ টি ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা ১৭৯। প্রতিটি বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে।
কোন কোন দল লড়াই করছে?
চন্দননগরে লড়াই করছে তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, বিজেপি এবং কংগ্রেসের। সেখানে আসন সমঝোতা করেনি কংগ্রেস এবং বাম। দু'পক্ষই ‘একলো চলো’ নীতি নিয়েছে। ‘সংযুক্ত নাগরিক কমিটি’-র ব্যানারে বামফ্রন্ট লড়াই করছে। ৩৩ টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী তৃণমূল, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি। কংগ্রেসের লড়াই করছে ১৯ টি ওয়ার্ডে।
ভোটে নিরাপত্তা
ভোটের দিন ৬৬৯ পুলিশ আধিকারিক মোতায়েন থাকবেন। চন্দননগরে ঢোকা ও বেরোনোর আটি জায়গায় নাকা চেকিং চলছে। গঙ্গায় পুলিশ বোটে প্যাট্রোলিং হচ্ছে। নাকা তল্লাশি চলছে ফেরিঘাটগুলিতে। নিরাপত্তায় পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি, ডিসি, এডিসিপি পদমর্যাদার অফিসাররা থাকবেন। পুলিশ কমিশনার অর্ণব ঘোষও থাকছেন। আরটি মোবাইল ভ্যান এবং কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) থাকবে।
ভোটের ইস্যু
১) ডেঙ্গু: এবারের পুরভোটে ডেঙ্গুকে হাতিয়ার করছে বিরোধীরা। মশারি নিয়েও প্রচার চালিয়েছে বিরোধী দলগুলি।
২) নিকাশি ব্যবস্থা: স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কয়েকটি ওয়ার্ডে নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা আছে। তা নিয়ে প্রচারও চালাচ্ছেন বিরোধী প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুরনিগমে নিকাশির উপর জোর দেওয়া হয়নি। অনেক জায়গায় নোংরা জমে যায়। ড্রেনের গতিপথ রুদ্ধ হয়ে আছে। তবে অনেকের আবার দাবি, কয়েকটি ওয়ার্ড নোংরা হলেও সার্বিকভাবে চন্দননগর পরিচ্ছন্ন শহর।
৩) তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল: গতবার গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত হয়েছিল পুরবোর্ড। যা আমজনতার মনে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছিল। সেই বিষয়টি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা।
যদিও তৃণমূলের দাবি, শহরে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। সেই উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ভর করেই এবার পুরবোর্ড গঠন করবে তৃণমূল।
ভোটে নজরকাড়া প্রার্থী
১) রাম চক্রবর্তী: ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। টানা পাঁচবারের বিধায়ক।
২) ঐকতান দাশগুপ্ত: ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বামফ্রন্ট প্রার্থী।