পঞ্চায়েত হিংসা নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত একেবারে তুঙ্গে। এসবের মধ্যেই রাজভবনে পিসরুম খুলেছেন খোদ রাজ্যপাল। সেখানে রাতদিন আসছে ফোন। পরিস্থিতি এমন যে একটা ফোন রাখার আগেই আসছে পরের ফোন। খোদ দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত ফোন করে সুরক্ষা চেয়েছিলেন। পদক্ষেপও নিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
তবে এবার আর সাংসদের নয়, উত্তর ২৪ পরগনার এক অতি সাধারণ বাসিন্দা ফোন করেন পিসরুমে। আসলে তিনি ঘরছাড়া রয়েছেন। মনোনয়নপর্বের সময় তিনি বিডিও অফিস চত্বরে হিংসার মুখে পড়েছিলেন তিনি। এরপর আর ফিরতে ভরসা পাননি। তারপর থেকেই ঘরছাড়া। বাড়ি ফিরলে খুন হয়ে যেতে পারেন।আপাতত আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয়।
বুধবার সেই ফোন এসেছিল বলে খবর। এই ফোনের খবর যায় রাজ্যপালের কাছে। এরপরই শুক্রবার সেই অতি সাধারণ মানুষটিকে ডেকে পাঠান খোদ রাজ্যপাল। হয়তো ভাবতেই পারেননি তিনি। খোদ রাজ্যপাল ডেকে তাঁর কথা শুনবেন। তবে সেটাই বাস্তবে হয়েছে। প্রশাসন কথা শুনছিল না। শুনলেন রাজ্যপাল। মন দিয়ে। তারপর পদক্ষেপের আশ্বাসও দিলেন।
রাজভবনের পিস রুম এখন যেন অনেক ঘরছাড়াদের কাছেই ভরসার জায়গা।
রাজ্যপাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ভীষণ ভয়ে আছেন। যে প্রশাসনের কাছে তিনি সাহায্য পাবেন বলে আশা করেছিলেন, সেখান থেকে তিনি কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না। তিনি কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাই আসতে বলেছিলাম।
আসলে এই ভয়ের পরিবেশ যাতে না থাকে তার জন্য়ই চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল। ঘরছাড়া, হিংসায় ক্লান্ত মানুষ যখন কোথাও সাড়া পাচ্ছেন না তখন একমাত্র ভরসা রাজভবনের পিসরুম। সেখানে আসছে ফোন। দুই ভাবে সেখানে ব্যবস্থা নিচ্ছেন রাজ্যভবন।
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বাংলার মাটি থেকে হিংসাকে উপড়ে ফেলতেই হবে। তিনি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা উল্লেখ করেছেন।
তবে সূত্রের খবর, মূলত ফোন এলে রাজভবন থেকে স্থানীয় প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনকে গোটা বিষয়টি জানাচ্ছে। অন্য়দিকে ফোন এলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজ্যপাল নিজে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন। অভয় দিচ্ছেন।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আসলে এই অভয় কোথাও পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। দিচ্ছেন রাজ্যপাল। গ্রামে গ্রামে চোখ রাঙানি। তার মাঝে বাসিন্দারা অনেকেই চাইছেন অবাধ নির্বাচন হোক। তবে এসবের মধ্য়ে আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, প্রতি ভোটার পিছু কেন্দ্রীয় বাহিনী দিক। আমাদের কিছু এসে যায় না। আমরাই জিতব।