পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার ঘটনায় সকাল থেকেই তপ্ত বাংলা। দফায় দফায় গুলি, বোমাবাজি। কেউ হারালেন ভাইকে, কেউ বা দাদা কিংবা সন্তানকে। একের পর এক মায়ের কোল খালি হয়ে গিয়েছে। ভোটের দিনে ১৫জনের প্রাণ গিয়েছে বলে বেসরকারি সূত্রে খবর। আবার অসমর্থিত সূত্রে খবর প্রাণ গিয়েছে ১৪জনের। তার মধ্য়ে ৯জনই তৃণমূলের বলে দাবি করা হচ্ছে। ৩১ দিনের ৩৩জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। তবে কমিশন অবশ্য এত মৃত্যুর কথা স্বীকার করেনি। কিন্তু যারা মারা গেলেন কী তাদের পরিচয়?
একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে বেসরকারি সূত্রে মৃতের তালিকা মিলেছে।
মুর্শিদাবাদের মৃত্যু মিছিল
ভোটের আগের রাত তখন প্রায় সাড়ে ১০টা। খবর আসে মুর্শিদাবাদের কাপাসডাঙায় এক তৃণমূল কর্মী বাবর আলিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। পরে মৃত্যু হয় তার। আর রাতেই বোঝা গিয়েছিল কী হতে পারে ভোটে দিন। আর হলও সেটাই।
খড়গ্রাম ও রেজিনগরে দুই তৃণমূল কর্মী খুন হন বলে খবর মিলেছে। নওদাতে এক কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
বাদ থাকেনি সিপিএম। ভোট দিতে এসেছিলেন সিপিএম কর্মী রওশন আলি। তখনই সংঘর্ষ। বেধড়ক মার তাকে। জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু। ভোট দিতে এসে ফিরল লাশ।
অশান্তির ভরকেন্দ্র কোচবিহার
কোচবিহারের দিনহাটা সকাল থেকেই উত্তপ্ত। দিনহাটার কালীরপাট গ্রামে ভোটকে ঘিরে তুমুল গণ্ডগোল। গুলিবিদ্ধ হন এক ব্যক্তি। মৃতের নাম চিরঞ্জিত কার্জি। পরিবারের দাবি তিনি সাধারণ ভোটার। তবে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে নানা চর্চা হচ্ছে। দিনহাটায় মৃত এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ।
কোচবিহার ১ ব্লকের ফলিমারিতে ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্য়েই পড়ল বিজেপি কর্মীর লাশ। গুলি করা হয়েছিল মাধব বিশ্বাসকে।
মালদহে অশান্তি
সকাল থেকেই অশান্ত মালদহ। মানিকচকে তৃণমূল কর্মী শেখা মালেককে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
উত্তর দিনাজপুরেও রক্তবন্যা
উত্তরদিনাজপুরের গোয়ালপোখরে তৃণমূলের বিদায়ী প্রধানের স্বামী মহম্মদ শাহেনশার মৃত্যু। একসময়ের কংগ্রেসের গড় ছিল গোয়ালপোখর। আর সেখানেই তীব্র সংঘর্ষ তৃণমূলের সঙ্গে। ধারালো অস্ত্রের কোপে আহত হন মহম্মদ শাহেন শাহ।
গোয়ালপোখরে কুপিয়ে খুন করা হয় মহম্মদ জামিলুদ্দিন। কংগ্রেস কর্মী বলেই তিনি পরিচিত। হেমতাবাদেও তৃণমূল কর্মী নারায়ণ সরকারের নিথর দেহ মেলে। পাট ক্ষেতের পাশে তার দেহ পাওয়া যায়।
অশান্ত নদিয়া
তৃণমল কর্মী হামজার আলি হাসান। ভোটের লাইনেই সংঘর্ষ। মৃত্যু হল তৃণমূল কর্মীর। চাপড়ার ঘটনা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গণ্ডগোল
বাসন্তীতে তুমুল গণ্ডগোল। আনিসুর রহমান নামে এক ব্যক্তির বোমার আঘাতে মৃত্যু।
পূর্ব বর্ধমান অগ্নিগর্ভ
একসময় সিপিএমের গড় ছিল বর্ধমান। এখন ক্ষমতা ক্ষয়িষ্ণু। তবে এদিন বামেরা ফের গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াইতে নেমেছিলেন। সেখানেই মৃত্যু হল বাম কর্মীর রাজিবুল হকের। আউসগ্রাম ২ ব্লকের ঘটনা।