গত সপ্তাহে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ভয়ঙ্করভাবে কাঁপতে শুরু করেছিল তাঁর হেলিকপ্টার। কোনওপ্রকার দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি অবতরণ করে। তার জেরে পায়ে ও কোমরে আঘাত পেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আর ৩০ সেকেন্ড দেরি হলেই হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়তে পারত। কোনওমতে রক্ষা পেয়েছেন। এমনটাই জানালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দুবরাজপুরে ভার্চুয়াল সভায় কেষ্টর হয়ে সওয়াল মমতার, জানালেন বাড়ি থেকে কবে বেরোবেন
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূমে দুবরাজপুরে সভা করার কথা ছিল মমতার। তবে চোটের কারণে তিনি সোমবার সেই সভায় যোগ দিতে পারেননি। বর্তমানে বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। তবে সোমবারর সভায় যোগ দিয়েছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মমতা সভায় যোগ দিতে না পারলেও ফিরহাদ হাকিমের মোবাইলের মাধ্যমে বক্তৃতা রাখেন।
বীরভূমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখন ভালো আছি। আমার কোমরে আর পায়ে চোট আছে। তবে আর ৩০ সেকেন্ড হলেই হেলিকপ্টারটা ক্র্যাশ করে যেতে পারত। আপনাদের আশীর্বাদ আর দোয়ায় আমি কোনওভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। দুর্ঘটনা হলে যে মানুষটা মরে যেতে পারত, তাকে নিয়ে অপপ্রচার করছে বিরোধীরা। আমি আপনাদের কাছে এর বিচার চাই।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তাঁর সুস্থ হতে এখনও ৭–৮ দিন সময় লাগবে। এছাড়াও দু'একটা ছোটখাট অস্ত্রোপচার হয়েছে বলেও তিনি জানান। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে যেতে না পারার জন্য আক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে পৌঁছাতে পারছি না বলে মনটা ছটফট করছে।’ তবে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হওয়ার সময় তিনি নিশ্চয়ই যাবেন বলে জানিয়েছেন।
সেইসঙ্গে সোমবার তিনি বীরভূমের জেলা সভাপতি জেলবন্দী অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। একযোগে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপিকে আক্রমণ করে অনুব্রতের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘কেষ্ট আমাদের সকলের ঘরের ছেলে। ও আজকে নেই। ওকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। ওর মেয়েকে পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিনা বিচারে অনুব্রত মণ্ডলকে আটকে রাখা হয়েছে। যাতে তৃণমূল পঞ্চায়েত করাতে না পারে তার জন্যই অনুব্রতকে আটকে রাখা হয়েছে।’ এদিকে অনুব্রতর পাশে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে পালটা আক্রমণ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘কেষ্টর পাশে দাঁড়ানো ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী আর কোনও উপায় নেই। কারণ কেষ্ট মুখ খুলে দিলে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবার বিপদে পড়বে। তাই নির্লজ্জভাবে মুখ্যমন্ত্রী একজন চোরের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।’
এদিকে সোমবরই গোঘাটের বদনগঞ্জে সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর ফোন থেকেও মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকারের কৃতিত্বের কথা তুলে ধরেন।