মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। আর তার পরই গ্রামবাংলা জুড়ে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার। তাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। কারণ বিরোধীরা প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বীরভূম থেকে বাগনান এই ছবিই দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু স্ক্রুটিনি–পর্ব চলাকালীন দেখা গেল অন্য এক দৃশ্য। সেটা হল বর্ধমানের রায়নায় দুটি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে সিপিএম। এমন দাবি তারাই করেছে। আর তাতে সবুজ আবিরের ভিড়ে এক চিলতে লাল আবির ভেসে উঠেছে। সুতরাং পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি।
এদিকে বাম জমানায় পূর্ব বর্ধমানের রায়না ছিল লালপার্টির শক্ত ঘাঁটি। সেখানে ২০১১ সাল থেকে তাদের নামগন্ধ মুছে যায়। ঘাসফুলই সর্বত্র বেড়ে ওঠে। সেখানে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে দুটি আসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় সিপিএমকে অক্সিজেন জুগিয়েছে। রায়নায় দুটি পঞ্চায়েতের দুটি আসনে জয়ী সিপিএম বলে তারা দাবিও করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ভরা বাজারে বর্ধমানের মতো জেলায় উলটপুরাণ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তবে এখানে দুটি বিষয় সামনে এসেছে। এক, একটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীই দেয়নি। দুই, আর একটি আসনে ভুল ধরা পড়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
কেমন করে ঘটনাটি ঘটল? অন্যদিকে রায়নার পাইটা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটা আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। আবার শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় সেখানেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় সিপিএম। এমনই উলটপুরাণ কাণ্ড ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়নাতে। সূত্রের খবর, রায়না ১ ব্লকের শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৮ নম্বর বুথটি অনগ্রসর জাতিদের জন্যে সংরক্ষিত। এই আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল চাঁদ মহম্মদ মল্লিককে। তিনি মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তাঁর জাতিগত শংসাপত্র জমা দেননি। তাই বাতিল হয়ে যায় তাঁর মনোনয়ন।
আর কী জানা যাচ্ছে? ওই শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে নেমেছিলেন সিপিএমের ইসমাইল মোল্লা। কিন্তু নির্বাচনের আগেই জয়ী হলেন তিনি। প্রার্থী নেই বলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেলেন তিনি। আবার রায়না পাইটা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নম্বর আসনে সিপিএম ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দল কেউই প্রার্থী দিতে পারেনি। ফলে জয় সেখানে নিশ্চিতই ছিল। এই আসনটি অনগ্রসর শ্রেণির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আছে। তৃণমূল–কংগ্রেস–বিজেপি কেউ এখানে প্রার্থী দেয়নি। সেখানে সিপিএমের প্রার্থী হন সবিতা মাথুর। ফলে তিনি একাই থেকে যান। আর ভোটের আগেই জয়লাভ করলেন।