আজ, বুধবার ইডি’র ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। তিনি আজ না যেতে পারলেও ১১ জুলাইয়ের পর যে কোনও দিন ডাকলে সাড়া দেবেন বলে ইমেল করে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। গত ৫ জুলাই একবার লম্বা সময় ধরে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আজ, বুধবার সকালে সায়নী গলফগ্রিনের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান। তবে বাড়িতে তাঁর বাবা–মা আছেন। আজ সকাল ১০টা নাগাদ জানা গেল, তিনি ইডি দফতরে যাচ্ছেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিষয়টি প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন। কুণাল সংবাদমাধ্যমে জানান, সায়নী ঘোষ এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজে ব্যস্ত। তাই দ্বিতীয় দফার ডাকে সাড়া দিতে পারছেন না। ভোট মিটলে যাবেন।
এদিকে ইডি সূত্রে খবর, আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত তারা সায়নী ঘোষের কোনও চিঠি হাতে পাননি। ইডির কাছে আজ আয়–ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার কথা ছিল সায়নী ঘোষের। বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুন্তল ঘোষের একটি সম্পত্তি কেনাবেচা সংক্রান্ত নথি থেকেই সায়নী ঘোষের নাম উঠে আসে। তারপর একাধিক আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সায়নীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। কুন্তলকে জেরা করেও উঠে এসেছে সায়নীর নাম। এছাড়া একাধিক সাক্ষী তাদের বয়ানে সায়নীর নাম উল্লেখ করেছে। ইডি’র স্ক্যানারে এখন সায়নীর ফ্ল্যাট। দু’দিন আগেই সাড়ে ১১ ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সায়নীকে।
অন্যদিকে ইডি সূত্রে আরও খবর, সায়নী ঘোষকে ডাকা হয়েছে আয়–ব্যয় সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র নিয়ে জানার জনয়। ‘অভিযুক্ত’ হিসাবে ডাকা হয়নি। কিন্তু আজ তিনি না আসায় সেটা হল না। তবে তিনি ১০০ শতাংশ সহযোগিতা করবেন, প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টা সেখানে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন সায়নী ঘোষ। তারপরই তাঁর না আসা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সায়নীর পরিবারের সদস্যদের ৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। সায়নীর আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির হিসেব মিলছে না। সায়নী শেষ যে আয়কর জমা দিয়েছেন সেখানে দেখানো হয়েছে বছরে আয় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা। অথচ তাঁর ফ্ল্যাটের দাম ৮০ লক্ষ টাকা। এত টাকার দামের ফ্ল্যাট কী করে কিনলেন সায়নী? উত্তর জানতে চায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
আরও পড়ুন: সীমানা সিল করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য পুলিশ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে
ঠিক কী বলেছেন কুণাল? ইডি’র তলবে আজ সিজিও কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন না সায়নী ঘোষ বলে দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে আজ গলসিতে যাবেন সায়নী। ইডি–কে চিঠি দিয়ে সে কথা জানিয়েছেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী।’ সায়নী ইমেল করে জানান, তিনি এখন পঞ্চায়েত নির্বাচরের প্রচারের কাজে ব্যস্ত। তাই ১১ তারিখ নির্বাচন মিটলে এবং তখন ডাকলে যে কোনও দিন তিনি ইডি দফতরে যাবেন। তবে সায়নী ঘোষের বক্তব্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাই তাঁকে আবার চারদিনের ব্যবধানেই তলব করা হয়। কুন্তল ঘোষের যোগসূত্র ধরেই নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে সায়নীর।