জলপাইগুড়ির সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সীমান্ত পার করে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতী নিয়ে এসে খুন করা হচ্ছে। এই মন্তব্যের পর রাজ্য–রাজনীতির অলিন্দে শোরগোল পড়ে যায়। তাই এবার সীমানা সিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলার সঙ্গে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের যে সীমানা রয়েছে, তা ‘সিল’ করে দেওয়া হবে। এই নিয়ে দুই রাজ্যের পুলিশ প্রধানের সঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যর বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভবানী ভবনে এই বৈঠক বসেছিল। সেখানেই সীমানা তল্লাশি, নিরাপত্তা এবং সিল করার বিষয়টি উঠে আসে। তাই এখন থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হচ্ছে।
কেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে? হাতে বেশি সময় নেই। কারণ শনিবার দিনই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশকেও সক্রিয় করা হয়েছে। দুই রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে মনোজ মালব্য সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘পাটনায় তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। তাঁরা বলেছিলেন, পুলিশেরও এই ধরনের একটা বৈঠক হওয়া দরকার। তাই এই বৈঠক হয়েছে। এখানে মাওবাদী সমস্যা, আন্তঃরাজ্য অপরাধ, সাইবার অপরাধ–সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়েও কথা হয়েছে।’ সুতরাং জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেই খবর।
আর কী তথ্য উঠে এল? সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বোমা–বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। সেসবের তদন্তে নেমে দেখা যায়, বিহার–ঝাড়খণ্ড থেকে অস্ত্র ঢুকছে এই বাংলায়। বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে এখানে। তাই অপরাধ বাড়ছে। বিহার পুলিশের সহযোগিতায় সে রাজ্যের বেআইনি অস্ত্র তৈরির কারখানায় হানা পর্যন্ত দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। এই বিষয়গুলি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় পুলিশ প্রধানদের মধ্যে বলে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে বিহারের ডিজি রাজিন্দর সিং ভাট্টি বলেন, ‘মুঙ্গেরের পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্র অন্যত্র থেকেও তৈরি হয়। আমরা নিজেরা আলোচনা করেছি। অস্ত্র কারবারিদের তথ্য নিয়ে।’
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনই পথ অবরোধের সিদ্ধান্ত বিজেপির, শহরে উত্তেজনার আশঙ্কা
আর কী জানা যাচ্ছে? এই রাজ্যের অনেক খুনের সঙ্গেই বিহার–ঝাড়খণ্ডের শার্প শুটারদের নাম উঠে আসে। তদন্তে নেমে দু’একজনকে পাকড়াও করা হয়েছে। এমনকী ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার কথাও উঠে এসেছে। সাইবার ক্রাইম থেকে শুরু করে নানা প্রতারণা এই রাজ্যের মানুষের সঙ্গে তারা করেছে। ব্যাঙ্ক প্রতারণার বেশিরভাগ কাজটাই নিয়ন্ত্রিত করে জামতাড়া থেকে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে ঝাড়খণ্ডের ডিজি অজয় কুমার সিং বলেন, ‘সাইবার অপরাধের ঘটনায় পুলিশ পদক্ষেপ করছে। তাতে কিছুটা অপরাধ কমেছে।’